Ads Area

Snow
Maruf Hossen Jewel

প্লীডিংস বলতে কি বুঝ? প্লীডিংস এর উদ্দেশ্যগুলি আলোচনা কর। আরর্জি ও প্লীডিংস এর মধ্যে পার্থক্য লেখ। কোন অবস্থায় মামলার প্লীডিংস সংশোধনের আবেদন মঞ্জুর অথবা অগ্রাহ্য হতে পারে? প্লীডিংস সংক্রান্ত মৌলিক নিয়মাবলী ব্যাখ্যা কর। আপীল আদালত কি এরুপ সংশোধন করা যায়?

দেওয়ানী কাযবিধি আইনের ৬ আদেশের ১ নং বিধিতে প্লীডিংস এর সংজ্ঞা, 
দেওয়ানী কাযবিধি আইনের ৬ আদেশের ২ নং বিধিতে প্লীডিংস এর মৌলিক নিয়মকানুন এবং 
দেওয়ানী কাযবিধি আইনের ৬ আদেশের ৩ নং থেকে ১৩ নং বিধিতে বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে প্লীডিংস এ অতিরিক্ত সংযোজনের বিষয়ে বলা হয়েছে।

১৯০৮ সালের দেওয়ানী কাযবিধি আইনের প্রথম তফসিলের ৬ আদেশের ১ নং বিধিতে প্লীডিংস সম্পর্কে বলা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে যে,
Pleadings shall mean plaint or written statement অর্থাৎ আরর্জি বা লিখিত বিবৃতিকে প্লিডিংস বলা হয়।
বাদী কর্তক দাখিলীয় আরজি এবং বিবাদী কর্তৃক দাখিলীয় লিখিত বিবৃতিকে একত্রে প্লিডিংস(আরজি জবাব) বলা হয়।

বাদীর প্লীডিংস বলতে বুঝায় বাদীর মামলায় দাখিল করা আরজি বা লিখিত বর্ণনা এবং বিবাদীর প্লীডিংস বলতে বুঝায় বিবাদী কর্তৃক দাখিল করা জবাব বা লিখিত বর্ণনা।


আইন বিদ মোখার
একটি মামলায় প্রত্যেক পক্ষগন কর্তৃক লিখিত আকারে দাখিলকৃত বর্ণনাই হল প্লীডিংস। যেখানে বিচারে প্রত্যেক পক্ষের বাদানবাদ উল্লেখ করা হয় এবং ঐ পক্ষের প্রতিপক্ষ কর্তৃক জবাব প্রস্তুতির জন্য প্রয়োজনীয় যাবতীয় বিষয়াদির বিবরণ দেয়া থাকে।

বাদীর আরর্জিতে নালিশের কারণ এবং প্রার্থিত প্রতিকারের বিষয় উল্লেখ থাকে। পক্ষান্তরে, বিবাদীর লিখিত বর্ণনায় বাদীর দাবীকে আইনত প্রতিহত করার যাবতীয় তথ্যাদি বিবৃত থাকে। একটি মামলায় আরর্জি ও লিখিত জবাবের বিষয় বস্তুকে যথাক্রমে বাদী ও বিবাদীর প্লীডিংস বলা হয়।

প্লীডিংস এর উদ্দেশ্য:
প্লিডিংস এর উদ্দেশ্যসমূহ নিম্নরুপ:
১)বিচার্য বিষয় প্রণয়ন করা
২)তর্কিত বিষয় নির্ধারণ করা
৩) ঘটনা বর্ণনা করা আইন উল্লেখ না করা
৪) বাদীর প্রতিকার প্রার্থনা করা
৫) বিবাদীর অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করা
৬) অন্তবর্তীকালীন প্রতিকার প্রার্থনা করা
৭) ওহংঢ়বপঃরড়হ ও উদঘাটন করা।


*প্লীডিংস এর মৌলিক নিয়মাবলী: 
৬ আদেশের ১৪ ও ১৫ বিধিতে প্লিডিংস এর নিয়মাবলা বিবৃত হয়েছে। দেওয়ানী কার্যবিধির ৬ আদেশের ১৪ বিধি অনুযায়ী প্লিডিংস সংশ্রিষ্ট পক্ষ তার এ্যাভোকেট (যদি থাক) কর্তৃক স্বাক্ষরিত হবে। কোন কারণে পক্ষগনের স্বাক্ষ না দেয়া হলে আদালতের অনুমতি নিয়ে পরেও স্বাক্ষর দেয়া যাবে। স্বাক্ষর না থাকার কারেণে প্লিডিং প্রত্যাখ্যা হয না। 

দেওযয়ানী কার্যবিধির ৬ আদেশের ১৫ বিধি অনুযায়ী প্রত্যেক প্লিডিংএর শেষে পক্ষগন সত্রপাঠে স্বাক্ষর করবেন।


এগুলো ছাড়াও বিভিন্ন আদালতের সিন্ধান্তের মাধ্যমে নি¤œলিখিত বিধিগুলি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে:
১) প্লীডিংস এ ঘটনার উল্লেখ থাকবে কিন্তু আইনের উল্লেখ থাকে না।
২) উল্লেখিত ঘটনা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা বলে বিবেচিত হতে হবে।
৩) প্লীডিংস এ সাক্ষ্যের কোন উল্লেখ থাকবে না।
৪) ঘটনাগুলো সংক্ষিপ্ত আকারে উল্লেখ করতে হবে।
৫) আইনগত ওজর আপত্তি যেমন- নিবৃত্তির নিিত,তামাদি ,রেস জুডিকাটা ইত্যাতির বিষয় পিইডঙ এ উত্থাপন করা যাবে।
৬) যেখানে কোন পক্ষ ভুল বিবরণ,জালিযাতি,বিশ্বাসভঙ্গ,অবৈধ প্রভাব ইত্যাতির উপর নির্ভও করেছে সেখানে তার বিশদ বিবরণ প্লিডিংস এ থাকতে হবে এব্যাপাওে শুধুমাত্র অভিযোগ উত্থাপন করলেই হবে না।

*কখন প্লীডিংস এর সংশোধনের আবেদন অগ্রাহ্য হতে পারে: 
নিম্ন লিখিত ক্ষেত্রে প্লিডিংস সংশোধনের আদেশ দেয়া যায় না:
১) যেক্ষেত্রে অত্যাধিক বিলম্বে সংশোধনের আবেদন করা হয়।
২) যে ক্ষেত্রে দসংশোধনের জন্য আবেদনকারীর অসৎ উদ্দেশ্য থাকে।
৩) যে ক্ষেত্রে মামরার প্রকৃত কারণ বা চেহারা পরিবর্তিত হয়ে যেতে পারে।
৪) যে ক্ষেত্রে ন্যায় বিচার বিঘিœত হতে পারে।
৫)যেক্ষেত্রে সংশোধন গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হয় না।

তবে ন্যায় বিচারের স্ভার্থে আদালত অপর পক্ষের সম্ভাব্য ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করে মামলার যে কোন পর্যাযে প্লিডিংস সংশোধন করতে পারেন। অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে যতদূর সম্ভব নমনীয় মনোভাব গ্রহন করা বাঞ্জনীয় বলে উপমহাদেশের বিভিন্ন হাইকোর্ট অভিমত ব্যক্ত করেছেন। 
এইভাবে,উল্লেখিত বিধান সাপেক্ষে প্লিডিং সংশোধন বা সংশোধন মঞ্জুর করা যায়।

আরজির জবাব সংশোধন করা যায় কি:
১৯০৮ সালের দেওয়ানী কাযবিধি আইনের প্রথম তফসিলের ৬ আদেশের ১ নং বিধিতে প্লীডিংস সম্পর্কে বলা হয়েছে। সেখানে বরা হয়েছে যে,
Pleadings shall mean plaint or written statement অর্থাৎ আরর্জি বা লিখিত বিবৃতিকে প্লিডিংস বলা হয়।
বাদী কর্তক দাখিলীয় আরজি এবং বিবাদী কর্তৃক দাখিলীয় লিখিত বিবৃতিকে একত্রে প্লিডিংস(আরজি জবাব)বলা হয়।
বিরোধীয় বিষয়ে উভয় পক্ষের দাখিলীয় বক্তব্যে কখনো কখনো কিছু ভুলভ্রান্তি দেখা দেয়,এ সকল ভুলভ্রান্তি সংশোধন না করলে ফলপ্রসূ প্রতিকার বাদী বা বিবাদী লাভ করতে পারে না। তাই প্লিডিংস(আরজি জবাব) সংশোধন করা একান্ত প্রয়োজন হয়।

প্লিডিংস সংশোধনের ক্ষেত্রে আদালতের কিছু কিছু বিষয় সতর্কতার সহিত বিবেচনায় নিতে হয। এ সকল বিষয়গুলি নিচে দেওযা হল-
ক) প্রস্তাবিত সংশোধনটি প্রকৃত বিরোধ নির্নয়ে আবশ্যক।
খ) সংশোধনটি অপর পক্ষের ক্ষতির কারন হবে না।
গ) সংশোধনের ফলে বিবাদী পক্ষের অনুকূলে জন্মানো কোন আইনগত অধিকার নষ্ট হবে না।
ঘ) সংশোধনের ফলে মামলার প্রকৃতি ও চরিত্র পরিবর্তিত হবে না।
ঙ) সংশোধনের ফলে নতুন ও অসামজ্ঞস্য মামলার আবতারণা হবে না।
চ) সংশোধনটি সরল বিশ্বাসে বিরম্ব না ঘটানোর উদ্দেশ্যে আনীত হয়েছে।
উপরোক্ত এসকল বিষয় বিবেচনায় নিয়ে আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে বা কোন পক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে প্লিডিংস(আরজি জবাব) সংশোধনের আদেশ দিতে পারেন।

আদেশ ৬ বিধি ১৭
দেওয়ানী কার্যবিধির অর্ডার ৬ রুল ১৭ স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে যে মামলার যে কোন পর্যায়ে আদালত কোন পক্ষকে আরজি জবাবের ন্যায় সঙ্গত সংশোধনের অনুমতি দিতে পারেন। কাজেই বিচারিক আদালতের রায়ের পর সংক্ষুদ্ধ পক্ষ আপীল আদালতেও আরজি ও জবাব সংশোধন করতে পারবে।

নজির:
বিচারিক আদালত রায় ঘোষনার পর প্লিডিংস সংশোধন করতে পারবেন। প্লিডিংস সংশোধনের দরখাস্ত মামলার যে কোন পর্যায়ে মঞ্জুর করা যেতে পারে যদি তা অপর পক্ষের কোন কোন ক্ষতির কারণ না হয়ে থাকে (গেরাম হাফিজ বনাম খাদেম আলী ২৯ ডিএল আর,এসসি,৩১১)। প্লিডিংস সংশোধনের দরখাস্ত বিচারের পূর্বে,বিচারের সময়ে অথবা বিচারের পরে অথবা আপীলে অথবা রিভিশনে (কাজল দাস বনাম মনোয়ারা,৮ বিএলসি ৪১৪,গুরু মিয়া বনাম শামসুল ইসলাম,৯ এম এলআর,৩৩৮), অথবা আপীলেট ডিভিশনে এমনকি জারী কার্যক্রমের ক্ষেত্রেও সংশোধন করা যায়। বাটোয়ারা মামলার ক্ষেত্রে চুড়ান্ত ডিক্রি না হওয়া পর্যন্ত বটোয়ারার একটি মামলা বিচারাধীন থাকে এবং হানিফ আলী বনাম হাজেরা ,৫৫ ডিএলআর পৃষ্ঠা ১৭ মামরায় ইহা সিন্ধান্ত হয যে, প্লিলিমিনারী ডিক্রি হওয়ার পরেও আরর্জি সংশোধন করা যায়। তাই ইহা নির্দ্বিধায় বলা যায় যে, বিচারিক আদালত রায় ঘোষনার পরেও প্লিডিংস সংশোধন করতে পারেন

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Snow
Maeuf Hossen Jewel

Below Post Ad

Snow
Maruf Hossen Jewel

Ads Area

Snow
Maruf Hossen Jewel