Ads Area

Snow
Maruf Hossen Jewel

জমি ক্রয় এবং রেজিস্ট্রেশনের সময় যেসব সাবধানতা অবলম্বন করা আবশ্যক {১৯০৮ সালের রেজিষ্ট্রেশন আইনের (সংশোধনী ২০০৫ মতে )} ।

 জমি ক্রয় এবং রেজিস্ট্রেশনের সময় যেসব সাবধানতা অবলম্বন করা আবশ্যক {১৯০৮ সালের রেজিষ্ট্রেশন আইনের (সংশোধনী ২০০৫ মতে )} । 



এক খণ্ড জমির মালিক হওয়া প্রতিটি মানুষেরই মনের একটি অদম্য কামনা। কিন্তু এই অদম্য মনের বাসনা পূরণ করতে গিয়ে মানুষ অনেক সময় এত বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়ে যে,কোনটি সঠিক কিংবা কোনটি ভুল তা বুঝে উঠতে পারে না।তারপরও জমি ক্রয়-বিক্রয়েদালাল,টাউট,বাটপার, প্রতারকদের প্রতারণা তো আছেই। বিশেষ করে শহর,উপশহর বা শহরের আশেপাশের এলাকার জমি ক্রয়ের ক্ষেত্রে ঝুঁকিটা সবচেয়ে বেশি।তাই বিভিন্ন রকমের বিভ্রান্তিতে পড়ে জমি ক্রয় করতে গিয়ে ক্রেতারা প্রায়ই

প্রবঞ্চিত হচ্ছে।সেই কারণে জমি ক্রয় কালে ক্রেতাদেরকে কী কী সাবধানতা অবলম্বন

করতে হবে তা তুলে ধরা হলো। একে ক্রেতা সাবধান (Doctrine of Caveat Emptor)নীতিও বলা যেতে পারে। জরিপের মাধ্যমে প্রণীত রেকর্ড অর্থাত্

খতিয়ান ও নকশা যাচাই করে নিতে হবে। জমির তফসিল অর্থাত্ জমির মৌজা,

খতিয়ান নম্বর, দাগ নম্বর ও উক্ত দাগে জমির মোট পরিমাণ। জমি ক্রয় করার পূর্বে উক্ত জমির সিএস রেকর্ড, এসএ রেকর্ড;আরএস রেকর্ড এবং মাঠ পর্চা গুলি ভালোভাবে দেখে নিতে হবে।


বিক্রেতা যদি জমিটির মালিক ক্রয় সূত্রে হয়ে থাকেন তাহলে তার ক্রয়ের দলিল রেকর্ডের সঙ্গে মিল করে বিক্রেতার মালিকানা সঠিক আছে কিনা তা নিশ্চিত হতে হবে। জমির বিক্রেতা উত্তরাধিকারসূত্রে জমিটি পেয়ে থাকলে সর্বশেষ জরিপের খতিয়ানে তার নাম আছে কিনা তা ভালোভাবে খতিয়ে দেখতে হবে। যদি সর্বশেষ খতিয়ানে বিক্রেতার নাম না থাকে তাহলে তিনি যার কাছ থেকে উত্তরাধিকারসূত্

রে জমিটি পেয়েছেন তা মূল মালিকের সংঙ্গে বিক্রেতার নামের যোগসূত্র কিংবা রক্তের সম্পর্ক আছে কিনা বিষয়টি ভালোভাবে দেখতে হবে। জরিপ চলমান এলাকায় বিক্রেতার নিকট রক্ষিত মাঠ পর্চা সঠিক আছে কিনা তা যাচাই করে দেখতে হবে।


উল্লেখ্য যে, যদি মাঠ পর্চার মন্তব্য কলামে কিছু লিখা থাকে যেমন (AD)তাহলে বুঝতে হবে উক্ত খতিয়ানের বিরুদ্ধে তসদিক বা সত্যায়ন বা শুদ্ধতা বা Attestation পর্যায়ে আপত্তি রয়েছে, সেক্ষেত্রে জমি ক্রয়ের আগে জরিপ অফিসে/ক্যাম্পে গিয়ে জমিটির সর্বশেষ অবস্থা জেনে নিতে হবে। তবে উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত জমি বিক্রেতার শরিকদের সঙ্গে জমি বিক্রেতার সম্পত্তি ভাগাভাগির বণ্টন নামা বা ফারায়েজ দেখে নিতে হবে।


জমি বিক্রেতার নিকট থেকে সংগৃহীত দলিল, বায়না দলিল, খতিয়ান, মাঠ পর্চা ইত্যাদি কাগজ পত্র সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন ভূমি অফিসে গিয়ে তলবকারী বা স্বত্বলিপি রেজিস্ট্রারের কাছে গিয়ে কাগজপত্রের সঠিকতা যাচাই করে নিতে হবে। সর্বশেষ নামজারী মাঠ পর্চা, ডিসিআর, খাজনার দাখিলা বা রশিদ যাচাই করে দেখতে হবে। জমির খাজনা বকেয়া থাকলে এবং বকেয়া খাজনা সহ জমি ক্রয় করলে বকেয়া খাজনা পরিশোধের দায়- দায়িত্ব ক্রেতাকেই নিতে হবে।


ক্রেতা যে জমিটি ক্রয় করতে যাচ্ছে সেই জমিটি সার্টিফিকেট মকদ্দমা ভুক্ত কিনা, কিংবা জমিটি নিলাম হয়েছে কিনা তা তহসীল অফিস/ উপজেলা ভূমি অফিস

হতে জেনে নিতে হবে। তবে অবশ্যই ক্রেতাকে মনে রাখতে হবে যে ১৯১৩

সালের সরকারী পাওনা/দাবী আদায় আইনের ৭ ধারায় বলা আছে সার্টিফিকেট মামলাভুক্ত সম্পত্তি বিক্রয় যোগ্য নয়। বিবেচ্য জমিটি খাস, পরিত্যক্ত/অর্পিত,

অধিগ্রহণকৃত বা অধিগ্রহণের জন্য নোটিশকৃত কিনা তা তহসিল অফিস

বা উপজেলা ভূমি অফিস বা জেলা প্রশাসক (ডি.সি অফিস) এর কার্যালয়ের L.A(এল.এ) শাখা থেকে জেনে নিতে হবে। ক্রেতা যে জমিটি কিনতে যাচ্ছে সেই

জমিটি নিয়ে কোনো আদালতে মামলা রুজু আছে কিনা তা অবশ্যই খতিয়ে দেখতে হবে। তবে মামলাভুক্ত কোনো জমি ক্রয় করা উচিত নয়।


বিক্রেতা তার জমির নকশা দেখিয়ে ক্রেতার নিকট জমি বিক্রয় করতে চাইতে পারে (যেমন বসুন্ধরা প্রকল্পের জমি নকশা/ছবির বিজ্ঞাপন দিয়ে বিক্রি হয়) সেক্ষেত্রে ক্রেতাকে উক্ত নকশার সাথে সঠিকভাবে মিল আছে কিনা বিক্রেতার দখল ও মালিকানা আছে কিনা তা সরেজমিনে গিয়ে দতন্ত করে আসতে হবে। সাব-রেজিস্ট্রি অফিস কিংবা জেলা রেজিস্ট্রারের অফিস থেকে সর্বশেষ জমি কেনা বেচার তথ্য

জেনে আসতে হবে। যে জমিটি বিক্রি হতে যাচ্ছে সেই জমিটি ঋণের দায়ে ব্যাংকে দায়বদ্ধ কিনা সেই বিষয়টি খোঁজ নিতে হবে। প্রস্তাবিত জমিতে যাতায়াতের রাস্তা আছে কিনা সেই বিষয়টিও সরেজমিনে তদন্ত করে জেনে নিয়ে জমি ক্রয় করতে হবে।

ক্রেতাকে সবচেয়ে যে বিষয়টি বেশি খেয়াল রাখতে হবে তা হলো কিছু কিছু এলাকা রয়েছে সেই এলাকার জমি জমা সরকারিভাবে বিক্রয় নিষিদ্ধ কিন্তু দালাল টাউট, বাটপার বা প্রতারক চক্র সহজ সরল ক্রেতাকে ঐ নিষেধাজ্ঞার কথা গোপন করে তার কাছে জমি বিক্রয় করতে পারে সেদিকে সব সময় সজাগ থাকতে হবে। যেমন-ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের জীব বৈচিত্র সংরক্ষণের স্বার্থে গাজীপুর জেলার সদর

উপজেলার

(ক) আড়াইশ প্রসাদ

(খ) বন ঘরিয়া

(গ) বিশিয়া কুড়ি বাড়ি

(ঘ) বারই পাড়া

(ঙ) উত্তর সালনা

(চ) বাউপাড়া

(ছ) বাহাদুরপুর

(জ) মোহনা ভবানীপুর


উপরোক্ত মৌজা গুলিতে ব্যক্তি মালিকানাধীন বা সরকারি জমিতে শিল্প/কারখানা/

পাকা ইমারত সহ ক্ষুদ্র কুটির শিল্প, কৃষি, দুগ্ধ ও মত্স খামার ইত্যাদি স্থাপন না করার জন্য পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় ২২/১১/১৯৯১ইং তারিখে পবম (শা-৩) ১৪/৯৪/ঌ৮৮ নং স্মারকে একটি পরিপত্র জারি করে।


সুতরাং উপরোক্ত মৌজাগুলির জমি কোনো ক্রেতা ক্রয় করলে সেই জমি ক্রয়টি অবৈধ হবে বা বাতিল বলে গণ্য হবে। এছাড়াও সরকার যদি কোনো এলাকার জমি যে কোন সময় ক্রয় বিক্রয় নিষিদ্ধ করে তাহলে সেই এলাকার ক্রেতাকে জমি ক্রয় করতে সাবধান থাকতে হবে। যে জমিটি ক্রেতা ক্রয় করতে যাচ্ছে সেই জমিটির

ব্যাপারে পরবর্তীতে কোন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা ব্যাংকের ওজর আপত্তি না সৃষ্টি হয় সে জন্য ক্রেতা কতৃর্ক অতি সাবধানতা অবলম্বন করার জন্য ৩ টি জাতীয় দৈনিক

পত্রিকায় লিগ্যাল নোটিশ বা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা যেতে পারে। সাধারণত গ্রামাঞ্চলের জমি ক্রয় করতে লিগ্যাল নোটিশের প্রয়োজন হয় না কিন্তু শহর বা শহরের আশে পাশের এলাকার জমি ক্রয় করতে হলে ক্রেতাকে জাতীয় দৈনিক পত্রিকার মাধ্যমে লিগ্যাল নোটিশ দেওয়া ভালো।

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Snow
Maeuf Hossen Jewel

Below Post Ad

Snow
Maruf Hossen Jewel

Ads Area

Snow
Maruf Hossen Jewel