১৮৭৭ সালের সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৫ ধারায় যে ৫ টি প্রতিকারের কথা বলা আছে তার মধ্যে (ক) নং পন্থা হল কোন সম্পত্তির দখল গ্রহণ ও দাবীদারকে অরপণ। উক্ত দখল গ্রহণ ও দাবীদারকে অরপণ এর বিষয়টি ১৮৭৭ সালের সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৮ থেকে ১১ ধারায় উল্লেখ করা হইয়াছে।
১৮৭৭ সালের সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৯ ধারা অনুযায়ী শুধুমাত্র স্থাবর সম্পত্তির দখলচ্যুত ব্যক্তি কতৃক দখল পুনরউদ্ধারের মামলা দায়ের করিতে পারে। অন্য কোন ক্ষেত্রে নয়।
১৮৭৭ সালের সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৯ ধারায় বলা হইয়াছে যে, যথাযথ আইনগত পন্থা ব্যতিরেকে যদি কোন ব্যক্তিকে তাহার অসম্মতিতে স্থাবর সম্মতিতে স্থাবর সম্পত্তি থেকে দখলচ্যুত করা হয়। তবে উক্ত দখলচ্যুত ব্যক্তি আদালতে দখল পুনরউদ্ধারের মামলা দায়ের করিতে পারিবেন।
সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৯ ধারা অবলম্বনে দেখানোর চেষ্টা করেছি যে, কোন ব্যক্তি যদি তার সম্পত্তি হতে তার অসম্মতি এবং আইনানুগ পন্থা ব্যতিরেকে দখলচ্যুত হয়, সে ক্ষেত্রে ওই ব্যক্তি কিভাবে আইনি প্রক্রিয়ায় তার সম্পত্তি পুনরুদ্ধার করতে পারে।
৯ ধারায় আমরা দেখেছি দখল পুনরুদ্ধারের মামলা করতে হলে বাদীকে শুধুমাত্র তার দখল ছিল, এটা প্রমাণ করাই যথেষ্ট; সে ক্ষেত্রে তার স্বত্ব অর্থাৎ মালিকানা ছিল কিনা সেটা প্রমাণ করার প্রয়োজন ছিল না।
উদাহরণঃ
করিম এক খন্ড জমি ভোগ দখল করিয়া আসছিল। রহিম আইনানুগ পন্থা ব্যতিরেকে করিমকে উক্ত সম্পত্তি থেকে বেদখল করেন। উক্ত ক্ষেত্রে করিম সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৯ ধারা অনুযায়ী আদালতে স্থাবর সম্পত্তি দখল পুনরউদ্ধারের মামলা দায়ের করিতে পারবেন। উক্ত ক্ষেত্রে করিমের স্বত্ব ছিল কি-না তাহা বিবেচ্য নয় এবং উক্ত মামলা দখলচ্যুত হওয়ার ৬ মাসের (তামাদি আইনের - ৩ অনুচ্ছেদ) মধ্যে দায়ের করিতে হইবে।
সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৯ ধারায় কতটি ক্ষেত্রে মামলা দায়ের করা যায়ঃ
১৮৭৭ সালের সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৯ ধারায় ১ টি ক্ষেত্রে মামলা দায়ের করা যায়
১। বাদীর পুর্ববতী দখলের ভিত্তিতে মামলা দায়ের করা যায়। যাহা আইনগত পন্থা ব্যতিরেক বেদখল করা হইয়াছে।
সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৯ ধারায় কে মামলা দায়ের করিতে পারেঃ
১। যে ব্যক্তিকে দখলচ্যুত করা হইয়াছে বা বেদখল হইয়াছেন যে ব্যক্তি।
২। তার দ্বারা দাবীদার অন্য কোন ব্যক্তি।
*** দখলচ্যুত ব্যক্তি এবং দখলচ্যুত ব্যক্তির মাধ্যমে দাবীদার ব্যক্তি।
১৮৭৭ সালের সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৯ ধারা কি কি প্রমান করিতে হইবেঃ
১. বাদী উক্ত সম্পত্তিটি ভোগ দখল করিয়া আসছিল বা দখলে ছিল।
২. বিবাদী বাদীকে জোরপুরবক/আইনানুগ পন্থা ব্যতিরেখে বেদখল করে ছিল।
৩. বেদখল হওয়ার ৬ মাসের মধ্যে মামলা দায়ের করিতে হইবে। (তামাদি আইনের - ৩ অনুচ্ছেদ)
*** সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৯ ধারায় স্বত্ব বিবেচ্য বিষয় নয়।
*** সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৯ ধারায় মামলায় স্বত্বের প্রশ্ন অপ্রাসঙ্গিক।
*** সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৮ ধারায় মামলায় স্বত্বের প্রশ্ন প্রাসঙ্গিক।
কীভাবে এবং কত দিনের মধ্যে দখল পুনরুদ্ধারের মামলা করতে হবে।
সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৯ ধারা অনুসারে, মামলা করতে হলে বাদীকে অবশ্যই হওয়ার ৬ মাসের মধ্যে মামলা করতে হয়।
৬ মাসের মধ্যে মামলা করতে পারিনা। তখন সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৯ ধারার অধীনে মামলা করার অধিকার হারিয়ে যায়।
১৮৭৭ সালের সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৯ ধারায় সরকারের বিরুদ্ধে কি মামলা করা যায় কি-নাঃ
১৮৭৭ সালের সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৯ ধারায় সরকারের বিরুদ্ধে কি মামলা করা যায় না।
*** ৯ ধারা বেসরকারী ব্যক্তি বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা যায়। কিন্তু ও সরকারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা যায় না।
১৮৭৭ সালের সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৯ ধারায় মামলার কোর্ট ফিঃ
১৮৭৭ সালের সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৯ ধারায় মামলার কোর্ট ফি এডভলেরম কোর্ট ফি এর অর্ধেক কোর্ট ফি এবং ৮ ধারায় এডভলেরম কোর্ট ফি।
১৮৭৭ সালের সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৮ ধারায় অধীনে কোন ডিক্রি বা আদেশ প্রদান করিলে তাহার প্রতিকার কিঃ
জেলা জজ অঅদালতে রিভিশন কারা যাবে। তবে আপীল বা রিভিউ করা যাবে না।
*** রিভিশন করিবেন বা স্বত্ব প্রমান করিয়া ৮ ধারায় মামলা দায়ের করিবেন।
১৮৭৭ সালের সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৯ ধারায় রেসজুডিকাটা নীতি প্রযোজ্য কি নাঃ
১৮৭৭ সালের সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৯ ধারায় মামলা করিয়া কোন ব্যক্তি উক্ত মামলায় প্রতিকার না পাইলে ৮ ধারায় মামলা দায়ের করিতে পারেন। উক্ত ক্ষেত্রে রেসজুডিকাটা নীতি প্রযোজ্য না। তবে কোন ব্যক্তি পুনরায় ৯ ধারায় মামলা দায়ের করিতে পারিবেন না।
সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৯ ধারায় মামলা করতে না পারলে আমাদের করণীয় কি
দখলচ্যুত হওয়ার ৬ মাস পার হয়ে গেলেও সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৮ ধারার অধীনে দেওয়ানী কার্যবিধি অনুযায়ী সুনির্দিষ্ট স্থাবর সম্পত্তি পুনরুদ্ধার করা যায়।