Ads Area

Snow
Maruf Hossen Jewel

দলিল বাতিল কি? কি কি কারনে দলিল বাতিল হয়? কে এরুপ দলিল বাতিলের প্রতিকার পেতে পারেন। বিরোধীয় দলিলে পক্ষ আছেন এমন ব্যক্তি কি শুধু মাত্র জাল দলিল ও তার উপর বার্ধ্যকর নয় মর্মে ঘোষনামুলক ডিক্রি প্রার্থনায় মামলা করা যায়।

 সাধারণভাবে দলিল বাতিল বলতে কোন দলিলকে অকার্যকর এবং অবৈধ্য বলে ঘোষনা করা।

১৮৭৭ সালের ১৮৭৭ সালের সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৩৯ ধারায় দলিল বাতিলের জন্য আদালতে মামলা দায়ের করিতে হইবে। বাতিল বা বাতিলযোগ্য দলিলের কারনে কোন ব্যক্তি যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় তাহাই হল সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৩৯ ধারার মুল উদ্দেশ্য।

মনে করুন, আপনার একটি দলিল বা আইনি ডকুমেন্ট ছিল, যা অন্যের হস্তগত হয়েছে, কিংবা সেটির এমন পর্যায়েরয়েছে, যার কার্যকরিতা বহাল থাকলে আপনার জন্য সমস্যার তৈরি হতে পারে। দলিল বাতিল করার এরকম কোনো প্রয়োজন পড়লে, আদালতের শরণাপন্ন হয়ে কাজটি করা যায়।


দলিল বাতিলের প্রতিকার

দলিল বাতিল কিঃ

১৮৭৭ সালের সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৩৯ ধারা হতে ৪১ ধারা পর্যন্ত আদালত কর্তৃক দলিলাদি বাতিলিকরণ সম্পর্কে বিধান বর্ণিত হয়েছে।

সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৩৯ ধারায় বলা হয়েছে যে, যে কোনো ব্যক্তি যার বিরুদ্ধে লিখিত চুক্তি অবৈধ বা বাতিলযোগ্য, যার যুক্তিসঙ্গত আশঙ্কা রয়েছে যে, তেমন দলিল যদি অনিষ্পন্ন অবস্থায় ছেড়ে দিলে, তাহা উক্ত ব্যক্তির গুরুতর ক্ষতির কারণ হবে। উক্ত ক্ষেত্রে উক্ত ব্যক্তি দলিল বাতিল বা দলিল বাতিলযোগ্য ঘোষনার মামলা করতে পারে।

            “১৮৭৭ সালের সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৩৯ ধারা আদালতের ইচ্ছাধীন বা বিবেচনামুলক ক্ষমতা।”

“১৮৭৭ সালের সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৩৯ ধারা মতে আদালত তাহার ইচ্ছাধীন বা বিবেচনামুলক ক্ষমতা বলে রায় প্রদান করিতে পারে এবং চুক্তি বিলুপ্তি হিসেবে দলিল ত্যাগের আদেশ প্রদান করিতে পারে। ।”

রেজিস্ট্রেশন আইন বা দলিল নিবন্ধন আইন অনুসারে, দলিল নিবন্ধন বা রেজিস্ট্রিকৃত হয়ে থাকলে, আদালত তাহার ডিক্রির একটি কপি সেই সংশ্লিষ্ট অফিসার বা কর্মকর্তার নিকট প্রেরণ করবেন, যার অফিসে উক্ত দলিল নিবন্ধন বা রেজিস্ট্রি করা হয়েছিল। উক্ত দলিল নিবন্ধন বা রেজিস্ট্রিকৃত কর্মকর্তা বা অফিসার উক্ত নিবন্ধনকৃত দলিল নিবন্ধন বহিতে আদালতের আদেশ মোতাবেক দলিল বিলুপ্তির বিষয় লিপিবদ্ধ করবেন।

দলিল বাতিল করণ এর তামাদিঃ

তামাদি আইন, ১৯০৮-এর ৯১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, দলিল সম্পর্কে জানবার বা অবগত হবার ৩ বছরের মধ্যে মামলা দাখিল করতে হবে। নয়তো এধরনের মামলা তামাদি হয়ে যাবে এবং এর কোনো প্রতিকার পাওয়া যাবে না।

তবে উক্ত ক্ষেত্রে মামলা তামাদি হয়ে গেলে সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৪২ ধারা অনুসারে ‘ডিক্লেরেশন মামলা’ দায়ের করে ভিন্নভাবে প্রতিকার পাওয়ার সুযোগ আছে।

নালিশী দলিলে দলিল রদ বা বাতিলের জন্য মামলা করেন, সেক্ষেত্রে কোর্ট ফি অ্যাক্টের বিধান মতে ‘এডভোলেরম কোর্ট ফি’ প্রদান করে মামলা দায়ের করতে হবে।

            যদি নালিশী দলিলে কোন পক্ষ না থাকেন এবং উক্ত দলিল তার উপর বাধ্যকর নয় মর্মে বিজ্ঞাপনী ডিক্রির প্রার্থনা করেন, সেক্ষেত্রে নির্ধারিত কোর্ট ফি প্রদানে মামলা করা যাবে।

দলিল বাতিলের ক্ষেত্রে ফৌজদারী কার্যাদিঃ

জালিয়াতির মাধ্যমে কোনো দলিল সম্পাদন করে লোক ঠকানো, প্রতারণা বা অন্যায়মূলক কাজে সহায়তাদান আইনের দৃষ্টিতে একটি গুরুতর অপরাধ। বাংলাদেশে প্রচলিত দণ্ডবিধির ৪০৬/৪২০ এবং ৪৬৩ থেকে ৪৭৭ ধারা পর্যন্ত জালিয়াতির  বিরুদ্ধে শাস্তির বিধান দেওয়া রয়েছে।

“৩৯ ডিএলআর-এর ‘সুফিয়া খানম চৌধুরী বনাম ফাইজুন্নেছা চৌধুরী মামলা’র সিদ্ধান্ত অনুসারে, কোনো দলিল রদের প্রার্থনা ছাড়াই শুধুমাত্র উক্ত দলিল বাতিল মর্মে ঘোষণার মামলা চলতে পারে। তবে যদি দেখা যায় যে, ১৮৭৭ সালের সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৩৯ ধরা অনুসারে উক্ত দলিল রদের ঘোষণা দরকার কিন্তু এ ধরণের কোন প্রার্থনা করা হয়নি, সে ক্ষেত্রে বাদীকে অতিরিক্ত কোর্ট ফি প্রদান করতে বলা হবে।”

কে এরুপ দলিল বাতিলের প্রতিকার পেতে পারেন/মামলা করতে পারেনঃ

সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৩৯ ধারা অনুযায়ী যে সকল ব্যক্তি দলিল বাতিলের প্রতিকার পেতে পারে তাহা আলোচনা করা হল যথাঃ

  • দলিলের পক্ষ
  • যে কোন ব্যক্তি যার বিরুদ্ধে দলিলটি বাতিল বা বাতিলযোগ্য
  • যে কোন ব্যক্তি উক্ত বাতিল বা বাতিলযোগ্য দলিলের কারনে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

প্রমানের দ্বায়িত্বঃ 

বাদী বা ফরিয়াদির।

কি কি কারন বা উপাদান বা শর্ত দলিল বাতিল হয়ঃ

সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৩৯ ধারা অনুযায়ী দলিল বাতিলের কারন সমুহ যথাঃ

  • ১. কোন লিখিত দলিল বাতিল বা বাতিলযোগ্য হলে।
  • ২. যদি বাদীর যুক্তিসংগত আশঙ্কা থাকে যে, এরুপ দলিল যদি অনিস্পন্ন থেকে যায় তাহলে বাদীর অপুরনীয় ক্ষতির কারন সৃষ্টি হইতে পারে।
  • ৩. উক্ত ক্ষতির কারণ গুরুত্বর হবে।

এছাড়াও অনান্য কারণ সমুহঃ

  • ৪. আদালত তাহার ইচ্ছাধীন বা বিবেচনামুলক ক্ষমতা বলে রায় প্রদান করিতে পারে এবং চুক্তি বিলুপ্তি হিসেবে দলিল ত্যাগের আদেশ প্রদান করিতে পারে।
  • ৫. দলিলটি জাল বা প্রতারণামুলকভাবে সৃষ্টি হতে হইবে।
  • ৬. আংশিক দলিল বাতিলের বেলায় বাতিলকৃত অংশ অনান্য অংশ হতে সম্পুর্ণ আলাদা হতে হবে।
  • ৭. উক্ত বিষয় অবগত হওয়ার ৩ বছরের মধ্যে মামলা দায়ের করিতে হইবে।
  • ৮. দলিল বাতিলের মামলায় বাদীকে পরিস্কার হাতে আসতে হবে।

উদাহরণঃ

ক তাহার ১ একর জমি খ এর কাছে ০২/০২/২০১০ইং তারিখে বিক্রয় করেন এবং উক্ত জমি হস্তান্তর করেন। তার পর ক পুনরায় উক্ত জমি গ নামক ব্যক্তির কাছে প্রতারণামুলক ভাবে ০২/০২/২০০৯ইং তারিখে বিক্রয়ের জাল দলিল সৃষ্টি করেন। উক্ত ক্ষেত্রে খ গ এর জাল দলিল বিলুপ্তি লাভ করবেন। 

দলির বাতিলের মামলায় আদালত কি প্রতিকার প্রদান করিবেনঃ

          ১৮৭৭ সালের সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৩৯ ধরা  অনুযায়ী দলিল বাতিলের মামলায় আদালত ২ ধরনের প্রতিকার প্রদান করিবেন যথাঃ

  • ক. দলিলটি বাতিল বা বাতিলযোগ্য বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া।
  • খ. দলিলটি অর্পণের আদেশ প্রদান ও নাকোচ করা।

বিরোধীয় দলিলে পক্ষ আছেন এমন ব্যক্তি কি শুধু মাত্র জাল দলিল ও তার উপর বার্ধ্যকর নয় মর্মে ঘোষনামুলক ডিক্রি প্রার্থনায় মামলা করা যায়ঃ

বিরোধীয় দলিলে পক্ষ আছেন এমন ব্যক্তি বা বাদী শুধু মাত্র জাল দলিল ও তার উপর বার্ধ্যকর নয় মর্মে ১৮৭৭ সালের সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৪২ ধারা অনুযায়ী ঘোষনামুলক ডিক্রি প্রাথনা করে মামলা দায়ের করিতে পারিবেন না।

উদাহরণঃ

বিরোধীয় দলিলে পক্ষ আছেন এমন ব্যক্তি বা বাদী শুধু মাত্র জাল দলিল ও তার উপর বার্ধ্যকর নয় মর্মে ১৮৭৭ সালের সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৩৯ ধারা ও ৪২ ধারা অনুযায়ী দলিল বাতিল ও ঘোষনামুলক ডিক্রি প্রাথনা করে মামলা দায়ের করিতে পারিবেন।

আব্দুল হামিদ বনাম ড. সাদেক আলী আহম্মেদ মামলায় বলা হইয়াছে যে, যে ক্ষেত্রে বাদী তর্কিত দলিলের পক্ষ ওসওক্ষত্রে দলিলটি বাদীর উপর বাধ্য নয় বা দলিলটি জাল  িই মর্মে ঘোষণামুলক মামলা দায়ের করিলে চলবে না। ঘোষণার সাথে দলিল বাতিল চাইতে হবে।

শুধু মাত্র দলিলটি ভুয়া এবং কার্যকর নয় মর্মে মামলা করা যায় কি-নাঃ    

 না।

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Snow
Maeuf Hossen Jewel

Below Post Ad

Snow
Maruf Hossen Jewel

Ads Area

Snow
Maruf Hossen Jewel