Ads Area

Snow
Maruf Hossen Jewel

তদন্ত কি? তদন্ত প্রক্রিয়া, উদ্দেশ্য, সময়সীমা এং তদন্তের বিরুদ্ধে প্রতিকার

 তদন্ত_কাকে_বলে?

ফৌজদারি কার্যবিধির ৪(১)(ঠ) ধারানুযায়ী কোন ঘটনার সত্যতা নির্ণয়ের জন্য সাক্ষ্য প্রমাণ সংগ্রহের উদ্দেশ্যে পরিচালিত কার্যক্রমকে তদন্ত বলে।
যা ৩ ধরনের ব্যক্তি কর্তৃক পরিচালিত হবে। যথাঃ-
১. পুলিশ অফিসার।
২. ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট থেকে ক্ষমতাপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার।
৩.
 ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট থেকে ক্ষমতাপ্রাপ্ত অন্যকোন ব্যক্তি।

মামলা_তদন্ত_করার_ক্ষমতা

সব পদের পুলিশ অফিসার মাত্রই তদন্ত পরিচালনার ক্ষমতাপ্রাপ্ত নন। কয়েকটি মাত্র পদ সেই ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারেন। যেমন-

* PRB ২৫৫(ক) বিধি অনুযায়ী থানার অফিসার ইনচার্জ তার থানার মধ্যে সকল তদন্তের জন্য ক্ষমতাবান। তবে তিনি নিজে তদন্ত না করেও তার অধঃস্তন অফিসার দ্বারা তদন্ত করাতে পারেন। [CrPC ১৫৬,১৫৭ & PRB ২৫৮]

* থানার অফিসার ইনচার্জের অনুপস্থিতিতে একজন SI পদের পুলিশ অফিসার যখন থানার দায়িত্বে থাকেন, তখন তিনি তদন্ত করতে পারেন। [CrPC ৪(ত) & PRB ২০১(খ)]

* বিশেষ পরিস্থিতিতে থানার অফিসার ইনচার্জের নির্দেশে PRB ২৫৫(খ) বিধি অনুযায়ী একজন ASI পদের পুলিশ অফিসার মামলা তদন্ত করতে পারেন। [CrPC ৪(ত) & PRB ২০৭(গ)]

* ASP হতে ঊর্ধ্বতন পদের পুলিশ অফিসারগণ মামলা তদন্ত করতে পারেন।  [CrPC ৫৫১]

তদন্তের_উদ্দেশ্যসমূহ-

ক. ঘটনাস্থলে দ্রুত গমন করা।
খ. ঘটনার তথ্য ও আলামত সংগ্রহ করা।
গ. ঘটনার সাথে পরিচিত ব্যক্তিদের মৌখিক সাক্ষ্য গ্রহণ করা।
ঘ. সন্দিগ্ধ অপরাধীদের খুঁজে বের করা ও গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা।
ঙ. অপরাধের মূল রহস্য উদঘাটন করা।

#তদন্ত_সম্পর্কিত_বিধান

তদন্ত সম্পর্কিত বিধান বা আলোচনা মূলত ৩টি আইনে আলোচনা করা হয়েছে৷ যেগুলো হল-
১. ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮ (CrPC)
২. পুলিশ প্রবিধান, ১৯৪৩ (PRB)
৩. পুলিশ আইন, ১৮৬১

#ফৌজদারি_কার্যবিধি_অনুযায়ী_তদন্ত_প্রক্রিয়া_এবং_বিধানসমূহ

১. ১৫৪ ধারায় এজাহারভুক্ত হওয়ার পর আমলযোগ্য মামলার তদন্ত শুরু হয় ১৫৬ ধারানুযায়ী।  তবে এজাহারভুক্ত না হলেও, সংবাদ প্রাপ্তির ভিত্তিতে পুলিশ তদন্ত কার্য শুরু করতে পারেন।

২. আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে আমলঅযোগ্য মামলার তদন্ত শুরু হয় ১৫৫ ধারানুযায়ী।

৩. নোটিশ প্রদান/সমনঃ-

i. পুলিশ ঘটনা সম্পর্কে জানে এমন ব্যক্তিদের সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য প্রদানের জন্য লিখিত নোটিশ/সমন দিতে পারে। (১৬০ ধারা)
ii. দলিল দাখিলের জন্য নোটিশ দিতে পারে। (৯৪ ধারা)
iii. যেকোনো স্থানে তল্লাশীর ক্ষেত্রে মালিক/দখলদার এবং স্থানীয় ২/ততোধিক ব্যক্তিকে সাক্ষী হিসেবে উপস্থিত হওয়ার জন্য ডাকতে পারে। (১০২, ১০৩ ধারা)
iv. সুরতহাল রিপোর্ট করার সময় পুলিশ ২/ততোধিক ব্যক্তিকে লিখিত আদেশ দ্বারা উপস্থিত হতে সমন দিতে পারে। (১৭৫ ধারা)

৪. পুলিশ ১৬০ ধারানুযায়ী উপস্থিত ব্যক্তিদের জবানবন্দি গ্রহণ করতে পারেন। (১৬১ ধারা)

৫. ১৬১ধারায় উপস্থিত ব্যক্তিরা তদন্তকারী কর্মকর্তার সকল প্রশ্নের উত্তর দিতে এবং আদালতে হাজির হয়ে সাক্ষ্য প্রদান করবেন এই মর্মে বন্ড দিতে বাধ্য।  তবে যেসব প্রশ্নের উত্তর সাক্ষীকে ফৌজদারি অপরাধে জড়িত করতে পারে। সেগুলো দিতে বাধ্য নন। (১৭২ধারা)

৬. মামলার তদন্ত, আলামত সংগ্রহ, চোরাইমাল উদ্ধার বা অপরাধীকে গ্রেফতার করতে পুলিশ যেকোনো এলাকায় গমন করতে পারবে এবং তল্লাশি করতে পারবে। (১৬৫, ১৬৬ ধারা)

৭. আমলযোগ্য অপরাধের ক্ষেত্রে পুলিশ অপরাধীকে বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তার করতে পারে। (৫৪ ধারা)

৮. অপরাধীকে গ্রেফতার বা আলামত উদ্ধার বা চোরাইমাল উদ্ধারকল্পে পুলিশ যেকোনো স্থানে তল্লাশী করতে পারবে। এক্ষেত্রে মালিক বা দখলদারের পূর্বানুমতি সাপেক্ষে ব্যাপারটা ঘটবে। এবং মালিক বা দখলদার অনুমতি প্রদানে বাধ্য থাকবে। অনুমতি না দিলে বা স্থানটি বন্ধ থাকলে, ভেঙ্গে পৃরবেশ করা যাবে। (৪৬-৪৯ ধারা)

৯. তদন্তকারী কর্মকর্তা সর্বোচ্চ ২৪ ঘন্টা অভিযুক্ত ব্যক্তিকে হেফাজতে রাখতে পারবে। তারপর নিকটস্থ ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট অভিযুক্তকে হাজির করতে হবে। (৬১ ধারা)

১০. আরো জিজ্ঞাসাবাদ / চোরাইমাল উদ্ধার / আলামত সংগ্রহের উদ্দেশ্যে পুলিশ remand চাইতে পারবে। (১৬৭ ধারা)

১১. গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির বিরুদ্ধে সাক্ষ্য প্রমাণ না পাওয়া গেলে,  পুলিশ তাকে জামিনে মুক্তি দিতে পারবে। (৪৯৬, ৪৯৭ ধারা)

১২. তদন্ত পর্যায়ে আসামীর বিরুদ্ধে পর্যাপ্ত তথ্যপ্রমাণ না পেলে, আসামীকে মুক্তি দেয়ার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদন দাখিল করা যাবে। (১৬৯ ধারা)

১৩. তদন্ত সম্পর্কিত অগ্রগতি পুলিশ ডায়েরিভুক্ত করবে। আদালত বিচারকালীন সময়ে উক্ত ডায়েরি তলব করতে পারেন। (১৭২ ধারা)

১৪. তদন্ত শেষ করার পর পুলিশ আদালতে প্রতিবেদন পেশ করবেন। (১৭৩ ধারা)

#তদন্ত_শেষ_করার_সময়সীমা

এ সম্পর্কে ফৌজদারি কার্যবিধির ৬১ এবং ১৬৭ ধারায় বলা হয়েছে।

* ৬১ ধারায় উল্লিখিত ২৪ ঘন্টার মধ্যে তদন্ত শেষ না হলে, তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামীকে নিকটস্থ ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট হাজির করবেন। এবং তদন্তের স্বার্থে রিমান্ড আবেদন করবেন। (১৬৭ ধারা)

* রিমান্ড একটানা ১৫ দিনের বেশি সময়ের জন্য মঞ্জুর করা যায় না। (১৬৭ ধারা)

* মামলার তদন্ত ১২০ দিনের মধ্যে শেষ না হলে, আসামী জামিনে মুক্তি পাবে। (১৬৭ ধারা)

#তদন্ত_প্রতিবেদন

এ সম্পর্কে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৮ এবং ১৭৩ ধারায় আলোচনা করা হয়েছে।

নিন্মপদস্থ পুলিশ অফিসার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিবেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নিকট। (১৬৮ ধারা)

১৭৩ ধারায় পুলিশ ২ রকম প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করবেন। যথা-
১. অপরাধের সত্যতা পেলে Charge Sheet.
২. সত্যতা না পেলে final report.

#তদন্ত_বিরুদ্ধে_গেলে_প্রতিকার

পুলিশ যদি সঠিক এবং সৎভাবে তদন্ত না করে এবং বিভিন্ন কারণে প্ররোচিত হয়ে আসামীর পক্ষে অর্থাৎ  আদালতে final report জমা দেয়। তাহলে বাদী তদন্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে Naraji Petition(না-রাজী) করতে পারেন। না-রাজী অর্থ, আমি মানি না।

* না-রাজী পিটিশনকে একটি fresh complaint হিসেবে ধরা হয়।

* যদি আদালত না-রাজী পিটিশন গ্রহণ করে, তাহলে পুনরায় তদন্ত করার নির্দেশ দিতে পারে। অথবা অপরাধ আমলে নিতে পারে।

*আর যদি আদালত না-রাজী খারিজ করে দেয়, তাহলে এর বিরুদ্ধে বাদী দায়রা আদালতে রিভিশন দায়ের করতে পারবে।

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Snow
Maeuf Hossen Jewel

Below Post Ad

Snow
Maruf Hossen Jewel

Ads Area

Snow
Maruf Hossen Jewel