সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন- ১৮৭৭ঃ
দেওয়ানী মামলা দায়েরের মাধ্যমে বাদী যে প্রতিকার প্রাথনা করে এবং আদালত সে প্রার্থনা অনুযায়ী ডিক্রির মাধ্যমে যে প্রতিকার মঞ্জুর করে তাই সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন।
অথবা ,
সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনে যে সকল সুনির্দিষ্ট প্রতিকার দেওয়া হয় তাই সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন-
উদাহরনে বলা যায় যে,
রহিম তার ১ বিঘা জম করিমের নিকট ৫ লক্ষ্য টাকায় বিক্রি করতে চুক্তি বদ্ধ হয়। বায়না পত্রে ২ লক্ষ্য টাকা পরিশোধ করে। কথা থাকে যে ১৫ দিনের মধ্যে অবশিষ্ঠ ৩ লাখ টাকা দিয়ে সাব কাব্লা দলিল সম্পাদন ও রেজিস্ট্রি করে নিবে। বায়না পত্র হওয়ার ৭ দিন পর রহিম করিম কে জানায় যে সে বায়নার টাকা ক্ষতিপুরন সহ ফেরত দিয়ে জমি বিক্রির চুক্তি থেকে অব্যাহতি চায়।করিম এ প্রস্তাবে রাজি না হয়ে আদালতে মামলা দায়ের করে। আদালত এই সিদ্ধার্ন্তে আসে যে চুক্তি মোতাবেক বাদীর বায়না সুত্রে ১ বিঘা জমি পাওয়ার অধিকার জন্মিয়েছে। এবং সেই সুনির্দিষ্ট অধীকার বাদী সেচ্ছায় পরিত্যাগ না করলে আদালতের কিছুই করার নাই।তাই আদালত বিবাদীকে সুনির্দিষ্ট কার্য সম্পাদনে বাধ্য করবেন। এটি ই হলো সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন।
এই আইন মুল আইন এটি দেওয়ানী কার্যবিধী অনুসরন করে চলে।
ধারা ৫ – সুনির্দিষ্ট প্রতিকার দেওয়ার নিয়মঃ ৫ ভাবে এই প্রতিকার দেও্বয়া যায়
- ১। অর্পনের মাধ্যমেঃ কোন নিদির্ষ্ট সম্পত্তি গ্রহন বা দখল এবং তার দাবিদার কে হস্তান্তরের মাদ্যমে
- ২। কোন পক্ষ যদি কোন কার্য সম্পাদনে বাধ্য থাকে তবে তাকে সেই কার্য সম্পাদন করার আদেশ প্রদানের মাদ্যমে( চুক্তির সুনির্দিষ্ট কার্যক্রম)
- ৩। নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমেঃপ যা না করার ব্যাপারে বাধ্যবাদগতা থাকে তবে তাকে সেই কাজ করবার আদেশ দানের মাদ্যমে
- ৪। ক্ষতিপূরন সিদ্ধান্ত ছাড়া পক্ষ সমুহের অধিকার নির্নয়( ঘোষণার দ্বারা)
- ৫।রিসিভার বা ত্তত্বাবাধায়ক নিয়োগ দ্বারা
ধারা ৭ঃএই আইনে কোনো দন্ড বা শাস্তির বিধান নেই।
ধারা ৮ঃসুনির্দিষ্ট স্থাবর সম্পত্তির স্বত্ব পুনুরুদ্ধার(Recovery of specific immovable property)
- এই ধারা অনুযায়ী স্বত্ব দখলের বা পুনুরদ্ধারের মামলা করা যায়।
- স্থাবর সম্পত্তির পুনুরধারের মামলা ১২ বছরের মধ্যে করতে হয়।
- ৮ ধারার কোর্ট ফী মুল্যানুপাতিক।
- এটি সবার বিরুদ্ধে করা যায়।
- এটির আপীল রিভিউ,রিভিসন আছে।
- স্বত্ব ঘোষনার মামলায় ডিক্রী জারীর প্রয়োজন নাই
- ৮ ধারার মামলা করতে হলে ৪২ ধারা আনতে হয়।কিন্তু ৪২ ধারা মামলা করতে হলে ৮ ধারা আনতে হয় না।
- ৮ ও ৪২ ধারার মামলা কে স্বত্ব সাব্যস্ত খাস দখলের মাওলা বলে।
- ৪২ ধারার মাওলায় বাদী বেদখল হলে দেওয়ানী কার্যবিধীর আদেশ ২৩ বিধি ১ এ মামলা প্রত্যাহার করবে।
- ৪২ ধারা ঘোষনামুলক মামলা(Declaration suit)
মর্যাদা বা অধিকার ঘোষনা সম্পর্কে আদালতের ইচ্ছাধীন বিবেচনামুলক ক্ষমতা অথবা আনুসংগিক প্রতিকারের জন্য এই মামলা করা হয়।সহজভাবে বলা যায় যে,কোন ব্যক্তির আইঙ্গত পরিচয়, মর্যাদা বা কোন সম্পত্তিতে তার কোন অধিকার যদি থাকে , অপর কোন ব্যক্তি তা অস্বীকার করে বা করতে চায়, তখন সেই ব্যক্তি তার অধিকারপ্রতিষ্ঠা করার জন্য এই মামলা করতে পারে। আদালত সে অনুযায়ী প্রতিকার দিবে। এটি ই ঘোষনা মুলক মোকদ্দমা।
- এই মোকদ্দমার জন্য নির্দিষ্ট ৩০০ টাকা কোর্ট ফী দিতে হবে
- এই মোকদ্দমায় আনুসংগীক প্রতিকার চাইতে হয়।
যখন কোন বাদী আনুসঙ্গীক প্রতিকার না চাক্য তাহলে আদালত তার কন প্রতিকারি মঞ্জুর করে না
উদাহরনঃ- নাদিম সাহেব বৈধ ভাবে একটি নির্দিষ্ট জমি দখল করেছে।পার্শ্ববর্তী গ্রামের অধিবাসীরা ঐ জমির মাঝ খান দিয়ে যাতায়াতের অধিকার দাবী করে।গ্রাম্বাসীর দাবী আইঙ্গত অধিকার নয় বলে নাদীম সাহেব ঘোষনার জন্য আদালতে ঘোষনামুলক মোক্কাদমা দায়ের করতে পারে।একে বিজ্ঞাপনী ডিক্রী ও বলে।
ধারা ৯।ঃ স্থাবর সম্পত্তির দখল পুনুরুদ্ধারের মামলা(suit by dispossessed of immovable property)
যদি কোন ব্যক্তি যথাযথ আইঙ্গত পন্থা ব্যতীত বা তার সম্পত্তি ছাড়া স্থাবর সম্পত্তি হতে দখল চ্যুত হয়তবে সেই ব্যক্তি বা তার দাবীদার কোন ব্যক্তি মামলা করার মাধ্যমে উক্ত স্থাবর সম্পত্তির দখল পুনুরুদ্ধার করতে পারে।
মামলা করতে গেলে ঐ ব্যক্তিকে ২ টি জিনিষ পরমান করতে হবে
- ১/ তার অনুমতি ছাড়া ও
- ২/ আইন গত পন্থা ব্যাতিত
তামাদি কাল ৬ মাস । স্থাবর সমপত্তি হতে দখল চ্যুত হওয়ার ৬ মাসের মধ্যে মামলা করতে হবে।
- এই মামলায় স্বত্ব কোন বাধা নয়।
- কোর্ট ফী মুল্যানুপাতিকের অর্ধেক।
- সরকারের বিরুদ্ধে করা যায় না।
- আপিল , রিভিউ করা যায় না, রিভিশন করা যায়।
ধারা ১০ঃ অস্থাবর সম্পত্তি দখল পুনুরুদ্ধার
অস্থাবর সম্পত্তি দখল পুনুরদ্ধারের মামলার কথা বলা হয়েছে। সুনির্দিষ্ট অস্থাবর সম্পত্তির দখলের অধিকারী ব্যক্তি দেওয়ানী কার্যবিধিতে নির্ধারিত পন্থায় দখল পুনুরদ্ধার করতে পারেন। জমির দলিল, চুক্তি পত্র,উইল নামা অস্থাবর সম্পত্তির অন্তর্ভুক্ত হবে।
যেমনঃ
মনির সাহেব নাদিমকে সারাজীবনের জন্য জমি উইল করে প্রদান করল এবং ইউসুফ কে সে ব্যাপারে অবহিত করল। মনির সাহেব মারা গেল। নাদিম জমিতে প্রবেশ করল,কিন্তু ইউসুফ নাদিমের সম্পত্তি ছাড়াই স্বত্ব সম্পর্কিত দলিলসমুহ হস্তগত করল। নাদিম ইউসুফের নিকট হতে ১০ ধারায় সেগুলো পুনুরুদ্ধার করতে পারেন।
– ধারা ১২ঃচুক্তি প্রবল বা চুক্তি বলবত করার মামলা( Specific performance enforceable)
* ৪টি বিষয়ের উপড় ভিত্তি করে চুক্তি ভংগের মামলা করা যায়
- ১। যখন কোন সম্পত্তি কার্য অথবা কোন চুক্তি পুরোপুরি বা আংশিক কোন জিন্মায় থাকে(১৯৭৩ সালের ৮ নং আইন দ্বারা বিলুপ্ত)
- ২।যখন কোন সম্পত্তিভুক্ত কার্য সম্পাদন না করলে কার্যত যে ক্ষতি হয় তা নির্নয় ক্করার জন্য যদি কোন মান্দন্ড না থাকে ।
যেমনঃ
শিল্পাচার্যজয়নুল আবেদীনের দুষ্প্রাপ্য একটি চিত্র কর্ম ৫ লক্ষ্য টাকা মুল্যে সহিদের নিকট বিক্রী করতে চুক্তি বদ্ধা হয়। পুরে বিপ্লব ঐ মুল্যে চিত্র কর্ম টি বিক্রি করতে না চাইলে সহিদ নির্দিষ্ট চুক্তির কার্য সম্পাদনে বিপ্লপকে আইঙ্গত বাধ্য করতে পারবেন।কারন এতে যে ক্ষতি হবে তা নির্ণয় করার কোন মান্দন্ড নাই।
- ৩। যখন চুক্তিভুক্ত কার্যটি এমন হয় যে তা সম্পাদন না করলে আর্থিক ক্ষতি পূরনের মাদ্যমে পর্যাপ্ত প্রতিকার পাওয়া যাবে না। যেমনঃ মনির ঢাকা শহরে৩ কাঠার এক্ষন্ড জমি আসাদের নিকট ৫ লক্ষ্য ?টাকা মুল্যে বিক্রি করতে চুক্তিবদ্ধ হয়।
পরে চুক্তি মোতাবেক কার্য করতে মনির অসম্মত হলে আসাদ চুক্তি মোতাবেক কার্য করার জন্য মনিরের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারবে।
- ৪। যখন এরুপ সম্ভনা থাকে যে সম্মতিভুক্ত কার্য সম্পাদন না করার ফলে আর্থিক ক্ষতিপুরন পাওয়া যাবে না।
যেমনঃ
মুনিরা পৃষ্ঠাংকন ছাড়াই কিন্তু মুল্যবান প্রতিদানের বিনিময়ে লাকির নিকট একটি প্রমিসরি নোট হস্তান্তর করে। মুনিরা দেউলিয়া হয়ে পরে এবং মিওতুকে স্বত্বনিয়োগী নিযুক্ত করে। লাকি, মিতুকে উক্ত নোটে পৃষ্ঠাংকন করতে বাদ্যকরতে পারে।কারন মিতু মুনিরার দ্বায় –দ্বায়িত্বের উত্তরাধিকারী হয়েছে এবং নোটে পৃষ্ঠাংকন না করার জন্য আর্থিক ক্ষতিপুরণ প্রদানের জন্য প্রদত্ত ডিক্রী অর্থ হীন হবে।
ধারা ২১ ঃ যে চুক্তিভংগের ফলে আদালত প্রতিকার মঞ্জুর করবেন না
৮টি বিষয়ের উপর আদালত চুক্তি ভংগের প্রতিকার মঞ্জুর করবেন না।
- ক। যে ক্ষেত্রে আর্থিক ক্ষতিপুরণ যথেষ্ট
- খ। যে চুক্তি সুক্ষ এবং পুঙ্খানুপুখ জটিল বিবরনের সমুষ্টী বা ব্যক্তিগত যোগ্যতা ও সংকলের উপর নির্ভর করে।
- গ। যে চুক্তির শর্তাবলী আদালত নিশ্চয়তার সাথে নির্নয় করতে পারেনা।
- ঘ। যে সকল চুক্তি তার প্রকৃতিগত কারনেই বাতিল যোগ্য।
- ঙ। কোন জিন্মাদারী যদি চুক্তির সীমা লংঘন করে চুক্তি করে।
- চ। যদি কোন কোম্পানির কর্মতা তার ক্ষমতা বহির্ভুত চুক্তি করে।
- ছ। যে চুক্তির কার্য সম্পাদন করতে হলে শুরু করার তারিখ হতে ৩ বছরের বেশী সময় ধরে কাজ করে যেতে হয়।
- জ। যে চুক্তির উল্লেখযোগ্য অংশ চুক্তির আগেই বিলুপ্ত হয়েছে
– ধারা ২১(ক) ঃ
– ২০০৪ সালের চুক্তি আইন অনুসারে হয়.২০০৫ সাল থেকে কার্যকর হয়।
– স্থাবর সম্পত্তির ক্ষেত্রে যা করতে হবে-
- – ক। স্থাবর সম্পত্তি বিক্রয়ের ক্ষেত্রে অবশ্যই রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।
- – খ) সম্পত্তি হস্তান্তর ঐ সম্পত্তির কিছু অংশ বা সম্পুর্ন অংশ অবশ্যই দখলে রাখবেন
- – গ) যে সম্পত্তির চুক্তি হয়েছে সেই সম্পত্তির সম্পুর্ন মুল্য আদালতে জমা দিয়ে মামলা করতে হবে।
ধারা ২২-সুনির্দিষ্ট কার্য সম্পাদনে ডিক্রী প্রদান করা আদালতের ইচ্ছাধীন বা বিবেচনামুলক ক্ষমতা
ধারা ৩৫ ঃ চুক্তি বাতিলের মামলা
কি ভাবে বিচারপুর্ব চুক্তি বাতিল বা চুক্তি রদ করা যায়
- ক।যেখানে চুক্তি বাতিলযোগ্য
- খ /।যেখানে আপাত্ দৃশ্যমান নয়, এমন কারনে চুক্তি অবৈধ এবং বাদীর চেয়ে প্রতিবাদীর দোষ বেশী।
- গ/যেখানে একটি বিক্রয় অর্পণ অথবা ইজারা গ্রহনের চুক্তি সুনির্দিষ্ট কার্য সম্পাদনের জন্য ডিক্রী প্রদান করা হয়েছিলো এবং ক্রেতারা ইজারাদার, ক্রয় মুল্য বা অপরাপর অর্থ পরিশোধ করাতে ব্যার্থ হয়েছিলো, যা আদালত তাকে পরিশোধ করার নির্দেশ দিয়েছিলো।
ধারা ১৩ঃ যে চুক্তির বিষয় বস্তু আংশিক ভাবে বিলুপ্ত হয়েছে তা সম্পাদন করা যাবে
চুলতি আইনের ৮৬ ধারায় বলা হয়েছে যখন অস্থাবর সম্পত্তির মালিকানা ক্রেতার নিকট চলে যায় তখন পরবর্তি ক্ষয় ক্ষতির ভার তাকেই বহন করতে হবে।
সম্পত্তি হস্তান্তর আইন ১৮৮২ এর ৫৪ ধারায় বলা হয়েছে যেস্থাবর সম্পত্তি বিক্রয়ের দ্বারা ক্রেতার সম্পত্তি তে কোন স্বার্থের সৃষ্টি হয়না।শুধু মাত্র রেজিষ্ট্রেশনের পর স্বার্থ সৃষ্টি হয়। দৈব দুর্ঘটনা ঘটলেও তা বিক্রেতাকে বহন করতে হবে
উপরোক্ত আলোচনা হতে বলা যায় যে-
- স্থাবর সম্পত্তির দায় ভার বিক্রেতার
- স্থাবর সম্পত্তির দায় ভার ক্রেতার
ধারা ১৪: চুক্তির অংশ বিশেষ সুর্নির্দিষ্টভাবে সম্পসদন, যে খানে অসম্পাদিত অংশ হচ্ছে ক্ষুদ্র বা ছোট। এটি কার্যকর এবং ক্ষতিপুরন পাবে।
ধারা ১৫ঃ চুক্তির অংশ হিসেবে সুর্নির্দিষ্টভাবে সম্পসদন, যে খানে অসম্পাদিত অংশ হচ্ছে বড়। অসম্পাদিত অংশ হচ্ছে।বিক্রেতা পালন করতে বাধ্য কিন্তু ক্রেতা বাধ্য নয়।
ধারা ১৬ঃ ভুক্তির স্বতন্ত্র অংশের সুনির্দিষ্ট কার্য সম্পাদনঃ
আলাদা স্থানে সম্পত্তি থাকলে আসল দলিল হতে ক্রেতা কিনতে বাধ্য। কিন্তু নকল দলিল হতে বাধ্য নয় বিক্রেতা বিক্রি করতে বাধ্য, ক্রেতা কিনতে ও পারে , আবার না ও কিনতে পারে।
ধারা ১৭ঃ ধারা ১৪,১৫,১৬ ধারা তে যে সক্ল আংশিক চুক্তি আছে আদালত এগুলোই কার্যকর করবে । এগুলো ব্যতিত আদালত অন্যকোন আংশিক চুক্তি কার্যকর করবে না।
ধারা ১৯ঃ স্থাবর সম্পত্তির ক্ষতিপুরন মামলা করতে হয় ১৯ ধারায়।
ধারা ২৯ঃ চুক্তিভংগের মামলায় হেরে গেলে ক্ষতিপুরনের মামলা করা যাবে না।
নিষেধাজ্ঞা( Injunction)
এর অর্থ হল স্থিতি অবস্থা বজায় রাখা
প্রকৃতির দিক থেকে এটি ২ প্রকার।
- ১। আদেশমূলুক
- ২। নিষেধমূলক
ধারা ৬ ঃ নিরোধক প্রতিকার(Preventive Relif)
যেটি করতে আদালত নিষেধ করে। কোন কাজ থেকে বিরত রাখবার জন্য যে প্রতিকার দেও্যা হয় তাই নিরোধক প্রতিকার বলা হয়।
ধারা ৫২ঃ নিরোধক প্রতিকার যেভাবে মঞ্জুর করা হয়।
এ প্রতিকার দেওয়া হয়
- স্থায়ী ,
- চিরস্থায়ী, ও
- অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার মধ্যমে।
ধারা ৫৩ অস্থায়ী ও স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা(Temporary & perpetual Injuction)
অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা সব সময় দেওয়ানী কার্যবিধি অনুসরণ করে। এর আবেদন দরখাস্তের মাধ্যমজে করতে হয়।
চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা শুধুমাত্র শুনানির পর মামলার গুনাগুনের উপর ভিত্তি করে ডিক্রী দ্বারা মঞ্জুর করতে হয়।মনে রাখা প্রয়োজন চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা বাদীর অধিকারের বিপরীতেও যেতে পারে।
ধারা ৫৪ঃ স্থায়ী ও চীরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুরঃ
আরজি দাখিলের ম আধ্যমে সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৫৪ ধারায় মামলা করতে হয়। এর ফলাফল ডিক্রী
উদাহরনঃ “ক” “খ” কে একটি নির্দিষ্ট জমি ভাড়া দেয় এবং “খ” সেখান হতে বালি বা নুড়ি পাথর খনন করে উত্তোলন না করার জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়। “খ” কে চুক্তি লংঘন্মুলক খনন কাজ হতে বিরত রাখার জন্য চীর স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারীর জন্য “ক” মাওলা করতে পারে।
ধারা ৫৫বাধ্যতামুলক বা আদেশ মুলক নিষেধাজ্ঞা(Mandatory Injunction)
একে বলা হয় আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা। আদেশ্মুলক নিষেধাজ্ঞা হল এমন একটি আদেশ যার মাদ্যমে আদালত বিবাদীকে কোন বাধ্যবাধকতা ভংগ রোধকল্পে এক.টি নির্দিষ্ট কার্য সম্পাদনে বাধ্য করে।
উদাহরনঃ
“ ক” একটা বাড়ী করলোযার ছাদের প্রারম্ভ ভাগ “খ” এর জমির উপড় পড়েছে। “খ” তার জমির ছাদের যতখানি প্রাম্ভভাগ পড়েছে তা ভেংগে ফেলার জন্য এই নিষেধাজ্ঞা জারীর মামলা করতে পারবে।
ধারা ৫৭ঃ যেখানে একটি চুক্তি দ্বারা নির্দিষ্ট কাজ করার সম্মতির সহিত প্রকাশ্যে অথবা অনুমিতভাবে ঐ কাজ করার সম্পত্তি সংযুক্ত সেখানে আদালত চুক্তির ইতিবাচক অংশ সুর্নিদৃষ্টভাবে কার্যকর করার আদেশ দিতে অপারগ হলে চুক্তির নেতিবাচক অংশ পালনের জন্য আদালত ৫৭ ধারায় আদেশ দিতে পারেন।
উদাহরনঃ
“ক” “খ” এর সাথে ১২ মাসের জন্য “খ” এর থিয়েটারে গান গাওয়ার জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়।ঐ সময়ের মধ্যে “গ”এর সাথে গান গাওয়ার চুক্তি করে। “খ” “ক” কে ঐ সময় গান গাইতে বাধ্য ক্করতে পারবে না কিন্তু “গ” এর থিয়েটারে ঐ ১২ মাসের মধ্যে গান গাইতে পারবে না , তা ৫৭ ধারার মাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা দ্বারা বন্ধ করা যায়।
ধারা ৫৬ঃ ১১টি ক্ষেত্রে আদালত নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর করবেন না। তা হলোঃ
- ১, একটি বিচার বিভাগীয় কার্যক্রম।
- ২। যে আদালত নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হচ্ছে সে আদালতের অধীনস্ত নয়, এমন আদালতে কার্যকরী স্থগিত রাখার জন্য।
- ৩। কোন ব্যক্তিকে আইন প্রণয়ন বিষয়ক কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করা হতে বিরত রাখা হয়।
- ৪। সরকারের কোন বিভাগীয় সরকারী কর্তব্যে অথবা বিদেশী সরকারের কোন সার্বভৌম্য কার্যে হস্তক্ষেপ করার জন্য।
- ৫। কোন ফৌজদারী কার্যক্রম স্থগিত রাখার জন্য।
- ৬/ যে চুক্তির কার্য সম্পাদন সুনির্দিষ্টভাবে কার্যকরী করা যায় না, এরুপ কোন চুক্তিভংগের নিরোধের জন্য।
- ৭/ উতপাতের জন্য বা অজুহাতে এমন কোন কাজ নিরোধ করা যাবে না যা উতপাতের পর্যায়ে পরে
- ৮/ এমন একটি ক্রমাগত লংঘন প্রতিরোধের জন্য যাতে বাদীর মৌন সমর্থন( Acquicescence)আছে।
- ৯/ যখন জিম্মা ভংগের মামলা ব্যতীত সমপরিমান ফল প্রদ প্রতিকারনিশ্চিত ভাবে অন্য কোন সাধারন কার্যক্রমের মাধ্যমে পাওয়া যায়।
- ১০/যখন আবেদঙ্কারীর বা তার প্রতিনিধির আচরন এমন হবে যে, তা তাকে আদালতের সাহায্য হতে বঞ্চিত করে
- ১১/যে ক্ষেত্রে দরখাস্তকারীর কোন ব্যক্তিগত স্বার্থ নেই।
ধারা ৩১ঃ দলিল সংশোধন(When Instrument may be rectified)
দুটি ক্ষেত্র দলিল সংশোধন করা যায়ঃ
- ক/ প্রতাররনার জন্য
- খ/ পারস্পরিক ভুলের জন্য
উদাহরনঃ
সহিদ আসাদের নিকট তার বাড়ী সংলগ্ন ৩টি গুদামের একটি বিক্রী করতে ইচ্ছুক হয়ে আসাদ কর্তৃক জমি সাব কাবলা দলিল সম্পাদন করে।যাতে আসাদ প্রতারনা করে ৩ টি গুদাম ই অন্তরভুক্ত করে। এ দলিল সংশোধন করা যাবে।
ধারা ৩৯- দলিল বাতিল বা রদের মামলা
কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোন লিখিত দলিল বাতিল বা বাতিল যোগ্য হলে এবং তার যুক্তি সংগত আশংকা আছে যে, উক্ত দলিল টি বাতিল না করলে তার মারাত্বক ক্ষতির কারন হবে।তাহলে ঐ ব্যক্তি উক্ত দলিল্টি বাতিল বা বাতিলযোগ্য ঘোষনার জন্য মামলা করতে পারেন এবং আদালত দলিল অর্পন বা বাতিলের আদেশ প্রদান করতে পারে।
বাতিলঃ
যদি দলিল রেজিস্ট্রেশন করা হয়, তবে বাতিলের মামলা করতে হয়.৩৯ ধারায় মামলা করতে হয়
বাতিলযোগ্যঃ
দলিল রেজিস্ট্রেশন করা না হলে বাতিল যোগ্য মাওলা করতে হয়। ৪২ ধারায় ঘোষনামুলক মামলা করতে হয়।
- দলিল বাতিলের মাওলা ৩ বছরের মধ্যে করতে হয়।
উধাহরনঃ
একটি জাহাজের মালিক ইউসুফ প্রতারনামুলকভাবে জাহাজটিকে সমুদ্র যাত্রার উপযুক্ত বলে একজন দায় গ্রাহক মনির কে উক্ত জাহাজের বীমা করতে প্রবৃত্ত করে। মনির বীমা পলিসির বিলুপ্তি পেতে পারে।
ধারা ৪০ এ ধারায় আংশিক দলিল বিলুপ্তির কথা বলা হয়েছে।
ধারা ৪১ঃ যে পক্ষের অনুকুলে একটি দলিল বিলুপ্তির রায় হয় সেই পক্ষকে অপর পক্ষ হতে ন্যায় বিচারের প্রয়োজনে আদালত উপযুক্ত ক্ষেত্রে ক্ষতিপুরন পাবার আদেশ দিতে পারবেন।
ধারা ৪৪ এ রিসিভার বা তত্ত্বাবধায়ক নিয়োগের কথা বলা হয়েছে।
ধারা ৪৫-৫১ বিলুপ্ত।
( ১৯৭৩ সালের ৮ নং আইন দ্বারা)