আমার ২০১০ সালে মুসলিম পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পরে আমার এক কন্যাসন্তান হয়। কিন্তু আমার স্বামী বিয়ের পর মাঝেমধ্যে কিছু না জানিয়ে বাসায় ফিরত না। আমি বিষয়টি প্রথমে খুব স্বাভাবিকভাবে নিলেও পরে জানতে পারি, আমার স্বামী গোপনে আরেকটি বিয়ে করেছেন। এ বিষয়ে আমি আমার স্বামীকে জানালে তিনি আমাকে রোজ মারধর করেন এবং যৌতুক দাবি করেন। এ ছাড়া আমার স্বামী আমার কন্যাসন্তানের কোনো ভরণপোষণ দেন না। আমি কীভাবে আমার স্বামীর বিষয়ে আইনগত পদক্ষেপ নিতে পারি।
আইনজীবীর উত্তর : আপনার স্বামী যেহেতু আপনার অনুমতি না নিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন, সে ক্ষেত্রে তিনি ফৌজদারি অপরাধ করেছেন। মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ-১৯৬১-এর ৬ ধারামতে, দ্বিতীয় বিয়ের ক্ষেত্রে সালিশি পরিষদের কাছে অনুমতি না নিলে বিয়ে নিবন্ধন হবে না।
আপনার স্বামীর বিয়েটি অবৈধ হিসেবে গণ্য হবে। আপনি ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দণ্ডবিধি আইন-১৮৬০-এর ৪৯৪-এর বিধানমতে মামলা দায়ের করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে আপনার স্বামী দ্বিতীয় বিবাহ করেছেন, তার কাবিননামা আদালতে উপস্থাপন করতে হবে। যদি অপরাধ প্রমাণিত হয়, আপনার স্বামী সাত বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডে ও অর্থদণ্ডে দণ্ডনীয় হবেন।
এ ছাড়া আপনার স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করে আলাদা বসবাস করলেও আপনি ও আপনার কন্যাসন্তান ভরণপোষণ পাবেন। সে ক্ষেত্রে আপনি পারিবারিক আদালতে ভরণপোষণ চেয়ে মামলা দায়ের করতে পারেন।
অন্যদিকে আপনার স্বামী যেহেতু আপনাকে যৌতুকের টাকার জন্য মারধর করেন, সে ক্ষেত্রে আপনি যৌতুক নিরোধ আইনের ৪ ধারায় ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নালিশি মামলা দায়ের করতে পারবেন। অপরাধ প্রমাণিত হলে আদালত তাঁকে এক থেকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেবেন।