সাধারণভাবে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র:
1. আবেদনপত্র/মামলার লিখিত বিবরণ (Plaint/Petition):
· মামলার বিষয়বস্তু, কারণ, আবেদনকারীর দাবি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করে লিখিত আবেদন।
2. সুনির্দিষ্ট আদালতের ক্ষমতাসম্পন্ন আদালতে দায়ের করার উপযোগী:
· মামলার ধরন ও আর্থিক মূল্য অনুযায়ী সঠিক আদালতে দায়ের করতে হবে।
3. আবেদনকারীর পরিচয়পত্র:
· জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) / পাসপোর্ট / জন্ম নিবন্ধন সনদের ফটোকপি।
· কর্পোরেট মামলা হলে ট্রেড লাইসেন্স, প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন সনদ, সংস্থার পরিচয়পত্র।
4. বিপক্ষের (প্রতিবাদী/আসামি) পরিচয় ও ঠিকানা:
· নাম, পিতা/মাতার নাম, পূর্ণ ঠিকানা সঠিকভাবে উল্লেখ করতে হবে।
· সম্ভব হলে বিপক্ষের জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর।
5. দলিলপত্র (প্রমাণাদি):
· চুক্তিভিত্তিক মামলা: চুক্তিপত্র, রসিদ, ইনভয়েস, চেক, ডাকটিকিট ইত্যাদি।
· জমি/স্থাপনা সংক্রান্ত: দাখিলা, দলিল, খতিয়ান, নামজারি সনদ, সার্ভে ম্যাপ, পর্চা।
· দেনা/ঋণ মামলা: স্বীকৃতি পত্র, চেক, প্রমিসরি নোট, লোন অ্যাগ্রিমেন্ট।
· পরিবারিক মামলা: বিয়ের সনদ, তালাকনামা, জন্ম সনদ, ভরণপোষণ আদেশ ইত্যাদি।
· ফৌজদারি মামলা: FIR/জিডি কপি, মেডিকেল রিপোর্ট, ফরেনসিক রিপোর্ট, সাক্ষীর তালিকা।
6. শুল্ক/স্টাম্প:
· মামলার ধরন ও দাবিকৃত অর্থের পরিমাণ অনুসারে নির্ধারিত আদালত ফি/শুল্ক পরিশোধের রসিদ।
7. ওকালতনামা (Vakalatnama):
· যদি আইনজীবীর মাধ্যমে দায়ের করা হয়, তবে আবেদনকারী কর্তৃক স্বাক্ষরিত ওকালতনামা।
8. বিবরনী (Statement of Facts):
· মামলার ঘটনা ও আইনি ভিত্তি সংক্ষেপে উল্লেখ।
9. প্রত্যয়নপত্র (Verification):
· আবেদনপত্রের তথ্য সত্য বলে প্রত্যয়ন করে দায়েরকারীর স্বাক্ষর।
10. অন্যান্য:
· মীমাংসা/আপোসের চেষ্টা: কিছু ক্ষেত্রে আদালত মামলা দায়েরের আগে মীমাংসার চেষ্টা বাধ্যতামূলক করতে পারে (যেমন: পারিবারিক মামলা)।
· নোটিসের কপি: আইনানুগ নোটিস প্রেরণের প্রমাণ (যদি প্রয়োজন হয়)।
বিশেষ নির্দেশনা:
· ফৌজদারি মামলা: সাধারণত পুলিশি তদন্ত/এজাহার/জিডির ভিত্তিতে শুরু হয়। অতঃপর চার্জশিট/ফাইনাল রিপোর্ট আদালতে দাখিল হয়।
· দেওয়ানি মামলা: উপরের তালিকাটি বেশি প্রযোজ্য।
· সুনির্দিষ্ট আইন: কিছু মামলা বিশেষ আইন অনুযায়ী দায়ের করতে হয় (যেমন: শ্রম আদালত, মুদ্রাদণ্ড আইন, সন্ত্রাস দমন আইন ইত্যাদি), সেগুলোর জন্য অতিরিক্ত কাগজপত্র লাগতে পারে।
সতর্কতা:
· আইনজীবীর পরামর্শ নিন: মামলার ধরন ও জটিলতা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ভিন্ন হতে পারে। একজন আইনজীবীর সহায়তা নেওয়া সবচেয়ে নিরাপদ।
· মূল দলিলের ফটোকপি: আদালতে সাধারণত ফটোকপি জমা দিতে হয়, তবে শুনানির সময় মূল দলিল দেখাতে হতে পারে।
· সময়সীমা: কিছু মামলার মেয়াদ/তামাদি আইন থাকে, দেরি করলে মামলা দায়ের নাও হতে পারে।
মামলা দায়ের একটি জটিল প্রক্রিয়া। তাই নিজের মামলার ধরন অনুযায়ী একজন যোগ্য আইনজীবীর সরাসরি পরামর্শ নেওয়াই সর্বোত্তম।


