জেনে নিন বিস্তারিত ;
পালিয়ে বিয়ে করার
আগে যা জানা দরকার !
এই লেখায়
পালিয়ে বিয়ে করা নিয়ে বিস্তারিত
আলোচনা করব, তবে তা
পালিয়ে বিয়ে করতে উৎসাহিত
করা নয়, বরং পালিয়ে বিয়ে করার পর
আইনি জামেলা সম্বন্ধে সাবধান
করা।
পালিয়ে বিয়ে করতে যেয়ে অনেক
জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে যেমন,
১. মেয়ের পরিবার কর্তিক অপহরণ
মামলা, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন
আইনে নারী নির্যাতনের মামলা।
মেয়ের বয়স যদি ১৬ বৎসরের কম হয়
তাহলে অপহরণ করে ধর্ষন সহ আর ও
অসংখ্য মামলা, যার
পরিণতি হতে পারে জীবনের সকল
আশা আখাংকার সমাধি।
যারা ভালবাসার
মানুষটিকে কোনভাবেই
হাতছাড়া (অবশ্যই প্রাপ্ত বয়স্ক নারী ও
পুরুষের স্বাধীন সম্মতি ক্রমে)
করতে চান না তারা নতুন জীবন শুরু
করার আগে আইনি বিষয় জেনে অগ্রসর
হওয়া উচিৎ।
নতুবা নতুন সংসার শুরু করার
আগে ভাগ্যে জুটবে জেল ও
জরিমানার গ্লানি।
পালিয়ে বিয়ে করতে গেলে মুসলিম
ছেলে মেয়েদের মনে প্রথম প্রশ্ন
জাগে বিয়েটার বৈধতা কেমন
হবে ?
বিয়েটাই বা কোথায় করতে হবে ?
কোর্টে নাকি কাজী অফিসে ?
ছেলেরা ভাবে, মেয়ের
বাবা যদি মামলা করে দেয়
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন
আইনে তাহলে কি জেল টেল
খাটতে হবে ? ইত্যাদি।
অনেকে ভাবেন এসব ক্ষেত্রে হয়ত
কোর্ট ম্যারেজ করতে হবে। কোর্ট
ম্যারেজ টার্মটা আমরা প্রায়ই
শুনে থাকি। কিন্তু
এটা নিয়ে অনেকের ভুল
ধারনা আছে।
অনেকে যারা অভিভাবকের
সম্মতি ছাড়া বা পালিয়ে বিয়ে করতে চায়
তারা কোর্ট মারেজ
করতে যায় বা করতে চায়।
অনেকে মনে করেন কোর্ট ম্যারেজ
হয়তো কোর্টে গিয়ে বিয়ে করা।
অথবা মাজিস্ট্রেট-এর
সামনে বিয়ে করা। আসলে তা নয়।
কোর্ট ম্যারেজ
করতে হলে আপনাকে যেতে হবে কোন
নোটারী পাবলিকের
(সরকারী রেজিস্টার্ড উকিল) কাছে।
তিনি আপনাদেরকে (বর-কনে) ১০০
বা ২০০ টাকার
স্ট্যাম্পে একটি হলফনামায় সই
করাবেন
যাতে লিখা থাকবে আপনারা প্রাপ্তবয়স্ক
এবং স্বজ্ঞানে, স্বেচ্ছায়
বিয়ে করেছেন।
তার মানে কি দাড়ালো?
বিয়ে আপনাদেরকে আগেই
করতে হবে।
কোথায়?
যথারিতি কাজী অফিসে।
রেজিস্ট্রী কাবিনমুলে।
কাজী অফিসে কাবিননামায় সই
করতে হবে ।
কাজি সাহেবকে আপনাদের এস এস
সি-এর সার্টিফিকেট বা ন্যাশনাল
আইডি কার্ড দেখাতে হবে বয়স
প্রমানের জন্য। বয়স অবশ্যই মেয়ের
বেলায় আঠারো ও ছেলের
ক্ষেত্রে একুশ বৎসর হতে হবে।
প্রাপ্ত বয়স্ক ২ জন পুরুষ অথবা ১
জন পুরুষ ও ২ জন
মহিলা সাক্ষী থাকতে হবে।
আর ঐ কাবিননামাই আপনাদের
বিয়ের প্রধান আইনী দলিল।
নোটারী পাবলিকের
কাছে গিয়ে আপনি শুধু ঐ দলিলের
আরও একটা সম্পূরক আইনী দলিল
করে রাখলেন
ভবিষ্যতে মামলা টামলায় একটু
সুবিধা পেতে।
তবে জেনে রাখবেন,
নোটারী পাবলিকের
কাছে করা হলফনামার কোনো দাম
নেই যদি আপনার রেজিস্টার্ড
কাবিননামা না থাকে।
কাবিননামা থাকলে আপনার বিয়ের
পক্ষে আর কোনো ডকুমেন্টই
লাগবেনা। কাবিননামাই সব।
বিয়ে হয়ে গেলে অনেক সময় দুই
পক্ষের বাবা মা-রা মেনে নেয়,
অনেক সময় মেনে নেয়না। অনেক সময়
মেয়ের
বাবা ক্ষেপে গিয়ে ছেলের
বিরুদ্ধে মামলা করে বসে।
মামলাগুলো হয় সাধারনত অপহরনপূরবক
ধর্ষনের। নারী ও
শিশু নির্যাতান দমন আইনে মামলার
ধারাগুলো জামিন- অযোগ্য
এবং আমলযোগ্য।
অর্থাৎ পুলিশ এসব
ক্ষেত্রে ম্যাজিস্ট্রেট
বা আদালতের অনুমতি ছাড়াই
আসামিকে এরেস্ট করতে পারে।
তাই যখন শুনবেন মামলা হয়েছে তখন
থেকে কিছুদিন পালিয়ে থাকুন
কারন পুলিশ ধরে নিয়ে গেলে কিন্তু
প্রথমেই জামিন হবেনা। আর
মানসিকভাবে শক্ত থাকুন, দুজনেই।
মামলা (উক্তরূপ) হবার পর তদন্ত
শুরু হবে। ভিকটিম (মেয়ের বাবার
চোখে মেয়েটি এখানে ভিকটিম)-
এর
জবানবন্দী দিতে হবে জুডিসিয়াল
ম্যাজিস্ট্রেট-এর সামনে।
এটি নারী ও শিশু নির্যাতান দমন
আইনের ২২ ধারার জবানবন্দি,
ম্যাজিস্ট্রেট-এর চেম্বারে হয়।
কেউ কোন প্রভাব
খাটাতে পারেনা।
এখানে মেয়েকে বলতে হবে,
“আমি স্বেচ্ছায় বিয়ে করেছি,
আমাকে কেউ অপহরন করেনি’’
ব্যাস। তাহলে মামলায় পুলিশ আর
চার্জশীট দেবেনা।
আসামি (ছেলে) অব্যাহতি পাবে।
তবে মেয়ের বাবা পুলিশকে ঘুষ
দিয়ে ছেলেকে কোন
ডাকাতি বা মার্ডার
কেইসে গ্রেফতার দেখানোর (shown
arrest) ব্যবস্থা করতে পারে। আমাদের
পুলিশ সব পারে ইনশাআল্লাহ।
এক পক্ষ হিন্দু বা মুসলিম বা অন্য ধর্মের
হলেও, ধর্ম পরিবর্তন না করেই
বিয়ে করা সম্ভব।
Special Marriage Act-III of 1872
এর আওতায়। এর জন্য কাজীর মত
আলাদা ম্যারেজ রেজিষ্টার আছেন।
পালিয়ে বিয়ে করার
পুর্বে মেয়েদেরকে অনেক কিছু
ভেবে সিদ্দান্ত নেওয়া উচিৎ।
ছেলেটির স্বভাব চরিত্র কেমন,
কতদিনের চেনা জানা, ছেলেটির
কোন উপার্জন আছে কি নাই,
ভালবাসার মুল্য বা গুরুত্ব তার
কাছে কত খানি ? কারণ
ভালবাসা যদি অন্ধ হয় তাহলে অন্ধ
কারে পথ হাতড়ে খোজা মুশকিল।
আর পরিবারের অমতে বিয়ে করার
মানে এই নয় যে পরিবারের মান
সম্মান ধুলায় মিশিয়ে দেওয়া।
তবে যাতে সমান মর্যাদা সম্পন্ন
পরিবার হয় তার দিকে খেয়াল
রাখতে হবে। সর্বপরি পরিবারের
অমতে বিয়ে করলে পরিবারের support
না ও থাকতে পারে। তাই যাই করেন
ভেবে চিন্তে করবেন।
নতুবা মেয়েদের
ক্ষেত্রে যেটা প্রাই হয় তা হল
প্রেমিক পুরুষ কোন এক
অচেনা পৃথিবিতে ফেলে রেখে উদাও
হয়ে যায়। তাই সাবধান।