ধরুন, কাউকে কিছু দান করলেন। এখন কি সেই দান আপনি প্রত্যাহার করে নিতে পারবেন?
একবার স্বেচ্ছায় দান করার পর তা প্রত্যাহার করা আইনে খুব শক্ত।
মুসলিম আইনের ১৬৭ ধারায় (ডি এফ মোল্লা) দান বাতিল সম্পর্কে বলা হয়েছে। ওই ধারার ১ উপধারা অনুসারে, দখল প্রদানের আগে যে কোনো সময়ে দাতা কর্তৃক হেবা বাতিল করা যেতে পারে।
কারণ দখল প্রদানের আগে দান আদৌ সম্পূর্ণ হয় না। সুতরাং দান বা হেবা বাতিল করতে হলে সেটি দখল অর্পণের আগেই করতে হবে।
২ উপধারায় বলা হয়েছে,
দখল অর্পণের পরও প্রদত্ত দান কিছু ক্ষেত্রে বাতিল করা যেতে পারে। তবে সেসব ক্ষেত্রে আদালতের ডিক্রি আবশ্যক।
সেই অবস্থাগুলো হলো_
ক. স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে এবং স্ত্রী কর্তৃক স্বামীকে যখন কিছু দান করা হয়;
খ. যখন নিষিদ্ধ ধাপের মধ্যে সম্পর্কিত একজন অন্যকে দান করে (যেমন যখন বাবা তার মেয়েকে দান করেন);
গ. দানগ্রহীতা যখন মারা যাবে;
ঘ. যে কোনো কারণেই হোক যখন প্রদত্ত বস্তুর মূল্য বেশি হবে অথবা এমনভাবে পরিবর্তিত বা রূপান্তরিত হবে যে তার আসন্ন আকৃতি শনাক্ত করা যাবে না;
ঙ. যখন দাতা দানের বিনিময়ে কিছু গ্রহণ করবে।
উল্লেখ্য, এ অবস্থাগুলোয় দখল অর্পণ করা হয়ে গেলে, আদালতের ডিক্রি ছাড়া দান বাতিল করা যাবে না।
৩ উপধারায় বলা হয়েছে, দাতা কর্তৃক প্রদত্ত কোনো দান বাতিল করা যেতে পারে কিন্তু তার মৃত্যুর পর তার উত্তরাধিকারীরা ওই দান বাতিল করতে পারবে না। ৪ উপধারায় বলা হয়েছে, একবার দখল অর্পিত হলে আদালতের ডিক্রি ছাড়া প্রদত্ত দান বাতিল করা যাবে না। দান বাতিলের জন্য দাতার ঘোষণা কিংবা তা আবার গ্রহণের উদ্দেশে কোনো মামলা করলে তা দানটি বাতিলের পক্ষে যথেষ্ট বিবেচিত হবে না। যতক্ষণ পর্যন্ত কোনো ডিক্রি প্রদান করা না হবে দান গ্রহীতা দানের বিষয়বস্তুটি ব্যবহার ও হস্তান্তর করতে পারবে।
হিন্দু আইনের দান একবার আইনত সম্পন্ন হয়ে গেলে তা আর বাতিল করা যায় না। তবে দান গ্রহীতা যদি প্রতারণা করে কিংবা অবৈধ প্রতিপত্তির মাধ্যমে দানের দলিল অর্জন করে, যদি পাওনাদারকে ঠকানোর উদ্দেশে দান করা হয়, সে ক্ষেত্রে ওই দান বাতিল বা বাতিলযোগ্য বলে গণ্য হবে।