সড়কে চলাচলের ক্ষেত্রে ট্রাফিক আইন নিয়মনীতি মেনে চলতে হয়। সে নিয়ম না মানলে চালক অথবা মোটরযানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয় ট্রাফিক বিভাগ। আইনগত ব্যবস্থার ক্ষেত্রে প্রথমেই মামলা দেওয়া হয়। সে মামলায় নির্দিষ্ট অঙ্কের জরিমানা করা হয়। যদি জরিমানা পরিশোধ করা হয়, তাহলে আর ঝামেলা থাকে না। আবার যদি জরিমানা পরিশোধ করা না হয়, সে ক্ষেত্রে আদালত পর্যন্ত বিষয়টি গড়ায়। এনটিভি অনলাইনের পাঠকদের জন্য এ সংক্রান্ত আইন তুলে ধরা হলো।
কী কারণে মামলা হতে পারে
বৈধ কাগজপত্র না থাকলে, রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট, ফিটনেস সার্টিফিকেট, ট্যাক্স টোকেন, ইন্স্যুরেন্স, সাধারণ পরিবহনের জন্য রুট পারমিট, সর্বোপরি চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স ইত্যাদি না থাকলে মোটরযান আইনে মামলা হতে পারে।
এ ছাড়া ভুল করে বা ইচ্ছাকৃতভাবে ট্রাফিক আইন না মানা-ট্রাফিক সিগন্যাল, লাইট না মেনে গাড়ি চালানো, বিপজ্জনকভাবে দ্রুতগতিতে গাড়ি চালানো, যখন তখন লেন পরিবর্তন করা, গাড়ি চালানোর সময় মোবাইল ফোনে কথা বলা, হেলমেট ছাড়া মোটরসাইকেল চালানো ইত্যাদি কারণে মামলা হতে পারে।
যানবাহনের ত্রুটি
যানবাহনের বিভিন্ন ত্রুটি, যেমন : হেডলাইট না জ্বলা বা না থাকা, ইন্ডিকেটর লাইট না থাকা বা না জ্বলা, সাধারণ পরিবহন, গাড়ির বডিতে পার্টিকুলার বা বিবরণ না থাকা, মালিক বা মালিকের নাম ঠিকানা না থাকা, গাড়িতে অতিরিক্ত আসন সংযোজন অথবা গাড়িতে বিআরটিএ অনুমোদন ছাড়া কোনো সংযোজন বা পরিবর্তন করা, ইত্যাদি কারণে যানবাহন মামলা হতে পারে।
মামলা কে করবেন
মামলা করা প্রয়োজন এবং যথাযথ মনে করলে কর্তব্যরত যেকোনো পুলিশ কর্মকর্তা এই মামলা করতে পারেন। রাস্তায় তাৎক্ষণিক মামলার ক্ষেত্রে মামলা প্রদানকারী কর্মকর্তা যানবাহনের একটি ডকুমেন্ট জব্দ করেন। তবে দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে মোটরযান আইন ছাড়াও নিয়মিত মামলা হতে পারে।
মামলা হলে করণীয়
যেকোনো আইন ভাঙার জন্য মামলা হতে পারে। ডকুমন্টারি বা অন্য কোনো কারণে মোটরযান আইনে মামলা হলে সেটা বিশেষ উদ্বেগজনক কিছু নয়।
ঢাকা শহরে পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের চারটি জোন বা এলাকা (পূর্ব, পশ্চিম, উত্তর, দক্ষিণ) আছে। একজন ডেপুটি কমিশনার (ডিসি, ট্রাফিক) প্রতিটি জোনের দায়িত্বে আছেন। কাজেই যেকোনো মামলার ক্ষেত্রে আগে বিবেচনা করতে হবে সেটি কোনো এলাকার আওতাভুক্ত। কোন ট্রাফিক বিভাগের অধীনে মামলা হয়েছে, সেটা জরিমানার সময় যে টিকেট দেওয়া হয় তার পেছনে লেখা থাকে।
সংশ্লিষ্ট জোনের ডেপুটি কমিশনারের দপ্তরে গিয়ে কিছু দাপ্তরিক কাজ সম্পাদনের মাধ্যমে খুব সহজেই মামলা নিষ্পত্তি করা যায়। এ ক্ষেত্রে নির্দিষ্টভাবে জরিমানা প্রদান করতে হবে। বিচারক অথবা ডিসি ট্রাফিক জরিমানার অঙ্ক নির্ধারণ করেন। জরিমানা নির্ধারণকারী পূর্ণ জরিমানার চার ভাগের এক ভাগ পর্যন্ত জরিমানা করতে পারেন, এমনকি মওকুফও করতে পারেন। জরিমানা প্রদানের পরপরই জব্দ হওয়া ডকুমেন্ট বুঝে নেওয়া দরকার।
নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি না করা হলে ওয়ারেন্ট ইস্যুর জন্য সংশ্লিষ্ট আদালতে মামলা পাঠানো হয়। আদালত থেকে ওয়ারেন্ট ইস্যুর পর পুলিশ কর্মকর্তারা রাস্তায় সংশ্লিষ্ট গাড়িটি আটক করে এবং আদালতে জরিমানার টাকা দিলে আদালত গাড়িটি ছেড়ে দেওয়ার আদেশ দিতে পারেন। অনেক সময় অভিযুক্ত চালক আদালতে আইনজীবীর মাধ্যমে পুলিশের মামলার বিষয়ে চ্যালেঞ্জ করা যায়।